|
|
|
|
ঝাড়খণ্ড বিজেপির নয়া সভাপতি রবীন্দ্র রাই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
ঝাড়খণ্ডে বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি হচ্ছেন রবীন্দ্র রাই। আজ দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ দিন দুপুরে রাঁচির হরমুতে বিজেপির রাজ্য পার্টির দফতরে ফ্যাক্স মারফত ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
নীতিন গডকড়ীকে সরিয়ে রাজনাথ সিংহকে পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি করার পরেই ধরে নেওয়া হয়েছিল ঝাড়খণ্ডেও বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদে নতুন মুখ আনা হবে। কিন্তু কে হবেন সেই নতুন মুখ তাই নিয়েই চলছিল জল্পনা। দলের অন্দরের খবর, নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে সভাপতির পদে বসাতে তৎপর ছিলেন একাধিক নেতা। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, কিংবা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী যশবন্ত সিংহ, কালিয়া মুন্ডা, রঘুবর দাসদের মতো ঝাড়খণ্ডের বিশিষ্ট বিজেপি নেতারা কেউ চাইছিলেন নিজে সভাপতি হতে। কেউ আবার চাইছিলেন নিজের পছন্দের কাউকে ওই পদে বসাত। এমনকী রবীন্দ্র রাইকে সভাপতি করতে দলের বিধায়ক নেতার পদ থেকে অর্জুন মুন্ডা ইস্তফাও দিয়েছেন বলেই দলীয় সূত্রে খবর। এ হেন বিবিধ জটিলতায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি বাছাইয়ের কাজ অনেকদিন ধরেই আটকে ছিল। একাধিকবার দিল্লিতে বৈঠক রাজ্য নেতাদের ডেকেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছিলেন না। |
|
রবীন্দ্র রাই। রবিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি। |
পেশায় অধ্যাপক রবীন্দ্র ঝাড়খণ্ড বিজেপির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা। বিহার থেকে ঝাড়খণ্ড পৃথক হওয়ার পরে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মরান্ডির নেতৃত্বে রাজ্যে বিজেপি যখন প্রথম সরকার তৈরি করে, রবীন্দ্র ছিলেন সেই মন্ত্রিসভার সদস্য। তিনি সেই সময় শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। অবিভক্ত বিহারের গিরিডি জেলার রাজধানওয়ার বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তিনি নির্বাচিত হন। পরে রাজ্য ভাগ হওয়ার পরে তিনি বাবুলাল মরান্ডির মন্ত্রীসভার স্থান পান। বিজেপির কৃষক মোর্চার এক সময় সভাপতিও ছিলেন রবীন্দ্র রাই। বাবুলাল মরান্ডি বিজেপি ছাড়ার পরে ২০০২ সালে তিনিও বিজেপি ছেড়ে মরান্ডির গড়া দল ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চায় (জেভিএম) যোগ দেন। দলীয় সূত্রে খবর, বাবুলালকে দুর্বল করতে অর্জুন মুন্ডার পরামর্শেই তিনি জেভিএমে যোগ দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য ২০০৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি ফের বিজেপিতে ফিরে আসেন। যদিও সেই বছর রাজধানওয়ার কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে তিনি হেরে যান।
রবীন্দ্র এ দিন বলেন, “বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে যত বেশি সম্ভব আসন জেতার চেষ্টা করব। আমরা স্বপ্নের ঝাড়খণ্ড তৈরি করব।”
দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, যে সময়ে রাজ্য সভাপতি বদল ঘটল তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। লোকসভা ভোট আসছে। আবার রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন চলায় বিধানসভা ভোটও যে কোনও সময় ঘোষণা হতে পারে। রাজ্যের লোভ দেখিয়ে কংগ্রেস যদি ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে জোটের দিকে এগোয় সে ক্ষেত্রে তা মোকাবিলা করার জন্য দলকে প্রস্তুত করতে হবে। আবার একইসঙ্গে বাবুলাল মরান্ডিও বিধানসভা ভোটে ‘ফ্যাক্টর’ হতে পারেন। ফলে দলের রণকৌশল কী হবে তা যিনি ঠিক করবেন সেই রাজ্য সভাপতিকে সময় দেওয়ারও পক্ষপাতী কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ফলে সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আর দেরি করতে চাইছিলেন না তাঁরা।
বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী। তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। দীনেশানন্দ বলেন,“নতুন সভাপতিকে অভিনন্দন। এরপরে দল যেমন দায়িত্ব দেবে তেমনভাবেই দায়িত্ব নিয়ে কাজ করব।” যদিও দলীয় সূত্রের খবর, দীনেশানন্দ চাইছেন জামশেদপুর থেকে বিজেপির প্রার্থী হতে। |
|
|
|
|
|