সরকারি কাজে দক্ষতা বাড়াতে ও দুর্নীতি রোধে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংস্কারে নামল চিন। দু’টি মন্ত্রক বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে কয়েকটি মন্ত্রকের।
১৯৯৮ সালে বড় ধরনের প্রশাসনিক সংস্কার করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ঝু রংজি। তার পরে এত বড় সংস্কারে হাত দেয়নি চিনা সরকার। আইনসভা জাতীয় গণ কংগ্রেসে প্রস্তাবটি পেশ করা হয়েছে। চিনা সরকারের বক্তব্য, এখন কাজের ক্ষেত্রে নানা সমস্যা রয়েছে বিভিন্ন দফতরে। অনেক ক্ষেত্রে একই কাজের দায়িত্বে রয়েছে দুই মন্ত্রক। কংগ্রেসের অধিবেশন শেষে দেশের দায়িত্ব নেবেন নয়া প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং।
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারে বাধা দিয়ে এসেছে প্রভাবশালী রেল মন্ত্রক। বিশ্বের সব চেয়ে বড় দ্রুতগতির রেলপথ তৈরি করতে গিয়ে ঋণের বোঝায় ডুবেছে রেল। বেড়েছে দুর্নীতি। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, রেল চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে নয়া একটি কোম্পানিকে। নিয়ন্ত্রণের ভার থাকবে পরিবহণ মন্ত্রকের হাতে। রেলে অভূতপূর্ব বেসরকারি লগ্নির সুযোগও তৈরি করা হবে।
বিশ্বের সব চেয়ে জনবহুল দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি বহু বিতর্কিত এক সন্তান নীতি কার্যকর করার ভার ছিল পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রকের উপরে। বহু ক্ষেত্রে জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ উঠেছে ওই মন্ত্রকের বিরুদ্ধে। ওই নীতি শিথিল করার প্রয়োজন আছে বলেও মত অনেক বিশেষজ্ঞের। কংগ্রেসে পেশ করা প্রস্তাব অনুযায়ী, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রককে। মন্ত্রকের এক প্রাক্তন অফিসারের মতে, এতে পরিবার পরিকল্পনার গুরুত্ব কমবে না। তবে জোর করে গর্ভপাত করানোর মতো কাজ কমতে পারে।
সম্প্রতি ভুয়ো ওষুধ ও বিষাক্ত খাদ্য বিক্রির প্রবণতা বেড়েছে চিনে। ফলে, খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। সব জলপথ নিরাপত্তা সংস্থাকে জাতীয় মহাসাগর প্রশাসনিক সংস্থার (ন্যাশনাল ওশিয়ানিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) আওতায় আনা হবে। সমুদ্রের বিভিন্ন এলাকা ও দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে জাপান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্প্রতি বিতর্কে জড়িয়েছে চিন। সেই প্রেক্ষিতে জলপথ নিরাপত্তাকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত অনেকের। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, জাতীয় মহাসাগর প্রশাসনিক সংস্থার হাতে থাকবে উপকূলরক্ষী বাহিনী, শুল্ক দফতর ও মৎস্য দফতরও। |