জলকষ্টেই কাটাচ্ছে ধস কবলিত গ্রাম
স নামার তিন দিন পরেও জনজীবন স্বাভাবিক হল না বারাবনির রসুনপুরে।
শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে বিডিও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত আশপাশের গ্রামগুলিতে জল সরবরাহ শুরু হয়নি, বিদ্যুৎ পরিষেবাও আংশিক চালু হয়েছে। এমনকী বিকল্প রাস্তা তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় যোগাযোগের ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন। প্রশাসনের কাজের গতি নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। প্রশাসনের তরফে যদিও দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ফেলার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার ভোরে বারাবনির রসুনপুর লাগোয়া এলাকায় ধস নামে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তা, জলের পাইপ ও বিদ্যুতের খুঁটি। তারপর থেকেই আশপাশের এক ডজন গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা জলকষ্টে। এলাকার মূল এবং একমাত্র যোগাযোগের রাস্তাটিতে ফাটল ধরায় কার্যত গ্রামবন্দি হয়ে রয়েছেন এলাকার মানুষেরা।
সারানো হচ্ছে জলের পাইপ। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মেরামতির কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। যে পদ্ধতিতে রাস্তা ও পাইপ সংস্কার করা হচ্ছে, তাও যথাযথ নয় বলে দাবি তাঁদের। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, কিছুদিনের মধ্যে আবারও ধস নেমে রাস্তা ও জলের পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শনিবার এ নিয়ে তাঁরা বিডিওকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। বিক্ষোভ দেখিয়েছেন থানাতেও। এমনকী বিক্ষোভ থামাতে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ পাঁচজনকে আটকও করে।
রবিবার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটির পাশেই অস্তায়ী একটা রাস্তা বানাতে মাটি ফেলার কাজ চলছে। দুমড়ে যাওয়া জলের পাইপ তুলে নতুন পাইপ বসানোরও তোড়জোড় চলছে। বিদ্যুৎ পরিষেবা আংশিক চালু হলেও জল এবং রাস্তা কবে চালু হবে তা নিশ্চিত করতে বলতে পারেননি বারাবনির বিডিও উজ্জ্বল বিশ্বাস। এ দিনও তিনি বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব রাস্তা ও জলের বন্দোবস্তো করা হবে।”
গ্রামবাসীদের মতোই এলাকার রাজনৈতিক দলগুলিও প্রশাসনের কাজে সন্তুষ্ট নয়। বারবানি পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা সিপিএম নেতা জয়তারা বাউড়ি বলেন, “এত ধীরগতিতে কাজ হলে গ্রামবাসীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আরও দ্রুতগতিতে কাজ করতে হবে।” স্থানীয় জামগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা সিপিআই নেতা দয়াময় চক্রবর্তীর অভিযোগ, “ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়ে দুর্ব্যবহারের শিকার হচ্ছেন।” স্থানীয় বাসিন্দা তথা কংগ্রেস নেতা নরেশ বাউড়ি বলেন, “কাজের অগ্রগতি নিয়ে আমরা খুশি নই। যেভাবে রাস্তা ও জলের পাইপ সংস্কার হচ্ছে তা বেশিদিন টিকবে না।” বারাবনির যুব তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায় বলেন, “একশ্রেণির গ্রামবাসীর বাধায় মেরামতির কাজ বাধা পাচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ না হলে বাসিন্দারাই কষ্ট পাবেন।”
কাজের মান ও ধীরগতিতে কাজ চলার যে অভিযোগ বাসিন্দারা তুলেছেন তা আংশিক সমর্থনও করেছেন বারাবনির বিডিও উজ্জ্বল বিশ্বাসও। তিনি জানান, এই এলাকাটি কার্যত ধসপ্রবণ। ফলে তড়িঘড়ি এখানে স্থায়ী রাস্তা বানানো যাবে না, জলের পাইপও বসানো যাবে না। কারণ যে কোনও সময়ে ফের ধস নেমে রাস্তা ও জলের পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ডিজিএমএস কর্তৃপক্ষকে এলাকা নিরীক্ষণ করে মাটির তলায় ফাঁপা নেই এরকম জায়গা বেছে দিতে বলা হয়েছে। সেই জায়গা চিহ্নিত হলেই সেখানে স্থায়ী রাস্তা বানানো হবে ও তার পাশ দিয়ে জলের পাইপ নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু এই কাজ করতে অনেক সময় লাগবে। তাই আপাতত সমস্যা মেটানোর জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.