ভ্যানো-র দৌরাত্ম্য দক্ষিণ দিনাজপুরে,
প্রভাব পড়েছে পরিবহণ শিল্পে
ইনের ফাঁক গলে যন্ত্রচালিত রিকশা ভ্যান বা ভুটভুটি বেড়ে চলেছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। গ্রামের সরু রাস্তা থেকে উঠে রাজ্য সড়কে এর চলাচল বেড়ে গিয়েছে। ইদানীং উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে ‘ভ্যানো’ বলে অধিক পরিচিত এই যানের নিরাপত্তার বালাই নেই। ভ্যানোর চালকের লাইসেন্সের দরকার হয় না। কিশোর থেকে তরুণ চালকের আনকোরা হাতে ভ্যানো চালায়। কাঠের পাটাতনের আসনের চারদিক পা নামিয়ে গাদাগাদি করে ৩০ জন তুলতে কসুর করে না। চালকেরা কাটা তেলে কালো ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে, কাঁপতে কাঁপতে চলা ভুটভুটি বা ভ্যানোর দাপটে হামেশা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
ক’দিন আগেই রাতে গঙ্গারামপুর এলাকায় ভ্যানো দুর্ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হন ২০ জন। তা সত্ত্বেও প্রশাসনিক কিংবা স্থানীয় স্তরে ভ্যানোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি। বিশেষত তপন, গঙ্গারামপুর, হরিরামপুর, বংশীহারী, কুশমন্ডি ও কুমারগঞ্জে ভ্যানোর আধিক্য চোখে পড়ার মতো। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, গত এক বছরে জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হন ৩৬২ জন। এর মধ্যে ভ্যানো দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা অন্তত ৮০ জন। বালুরঘাট বাস মালিক সমিতির সভাপতি অশোক চৌধুরী অভিযোগ করেন, “ভ্যানোর দৌরাত্ম্যে পরিবহণ শিল্প মার খেতে বসেছে। কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েও কাজ হয়নি।”
দক্ষিণ দিনাজপুরের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক মিলন ভটরাজ বলেন, “মোটর ভেহিক্যাল আইনের আওতায় পড়ে না। ওই সমস্ত ভুটভুটি ফলে আইনত এর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার উপায় নেই।” মোটর সাইকেলের বাতিল ইঞ্জিন কিংবা জল তোলার শ্যালো মেশিন তিন চাকার ভ্যানে লাগিয়ে স্থানীয়ভাবে তৈরি হচ্ছে ভ্যানো। তবে যারা অবৈধভাবে ওই যন্ত্র যান তৈরি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ভ্যানো নিয়ন্ত্রণ করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন আরটিও।
রাজ্য জুড়ে এসইউসি অনুমোদিত ‘সারা বাংলা মোটর ভ্যান চালক সমিতি’ নামে ভ্যানোর একটি সংগঠন রয়েছে। সংগঠনের রাজ্য সহ সভাপতি সাগর মোদক বলেন, “জেলায় প্রায় ৩০০০ মোটর ভ্যান চলছে।” দিন দিন তা বাড়ছে বলে স্বীকার করে তিনি জানিয়েছেন, “প্রশাসন বা পঞ্চায়েত থেকে লাইসেন্স দিয়ে মোটর চালিত ভ্যান বা ভ্যানোর থেকে সরকারিভাবে কর আদায় হোক। গত বাম সরকারের কাছে এ ব্যাপারে বহু আবেদন ও দাবি ডেপুটেশন দেওয়া হয়। তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী প্রয়াত সুভাষ চক্রবর্তী এ বিযয়ে আশ্বাস দেন। বিমার আওতায় এনে চালকদের নির্মাণ কর্মীদের মতো পেনশন প্রকল্পের আওতায় আনার দাবিও পেশ করা হয়।” মন্ত্রী মদন মিত্রকে সমিতির তরফে আর্জি জানালে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন বলে সাগরবাবু জানান। তাঁর বক্তব্য, “পরিবহণ মন্ত্রী আশ্বাস দেন, যত দিন না ভ্যানো নিয়ে সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত হচ্ছে, তত দিন সরকার জোরজুলুম করবে না।” গ্রামের বিরাট অংশের গরিব মানুষের জীবিকার সঙ্গে বিষয়টি যুক্ত বলে মদনবাবু মেনে নিয়েছেন বলে সাগরবাবুর দাবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.