জলপাইগুড়িতে হাইকোর্ট বেঞ্চের স্থায়ী ভবনের নির্মাণ শুরুতেই বাধার মুখে পড়ল। গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের সঙ্গে রাজ্যের পূর্ত দফতরের বৈঠকে স্থায়ী ভবনের নকশা নিয়ে আপত্তি তুলেছে হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, ভবনের নকশায় আরও কিছু পরিবর্তন করতে হবে। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরে নতুন করে নকশা তৈরি করতে হবে রাজ্য সরকারকে। হাইকোর্টের ‘ফুল কোর্ট’-এর বৈঠকে নকশায় কী কী পরিবর্তন থাকবে সেগুলি স্থির করে রাজ্যকে অবহিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। নকশা পরিবর্তনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে এ দিন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের মুখ্য স্থপতি মলি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমি বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম না। তাই আমার পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়।” রাজ্য সরকারের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবারের বৈঠকে স্থায়ী ভবনে এজলাশ এবং বিচারপতিদের ঘরগুলি বড় করা, ভবনের ভেতরে ৮০০ জন বসতে পারেন এমন একটি সভাকক্ষ তৈরির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২ মার্চ জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে হাইকোর্ট ভবনের জন্য অধিগৃহীত প্রায় ৪০ একর জমিতে স্থায়ী ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করে রাজ্য সরকার। ওই দিনই জলপাইগুড়িতে বেঞ্চের স্থায়ী ও অস্থায়ী ভবনের পরিকাঠামো পরিদর্শন করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি-সহ চার বিচারপতির দল। গত শনিবার নির্মাণ কাজের সূচনা হয়। তার পরে এই দিন পর্যন্ত বালিপাথর ফেলা, খোঁড়াখুড়ির কাজও হয়েছে। তবে এ দিন নির্দেশের পর শুক্রবার থেকে কাজ বন্ধ রাখতে হবে। প্রায় ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দে চার তলা ভবনের কাজ শেষ করতে দু’বছর সময় বেঁধে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাই কাজ বন্ধ রাখতে হলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, জলপাইগুড়িতে হাইকোর্ট বেঞ্চের নকশাকে গত বছরই কলকাতা হাইকোর্ট অনুমোদন দেয় বলে রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে। অনুমোদন মেলার পরেই গত বছর ১ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়িতে এসে স্থায়ী ভবনের কাজের শিলান্যাস করে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্টের তদানিন্তন প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল। শিলান্যাসের পরেই দরপত্র ডেকে স্থায়ী ভবন তৈরির কাজ শুরু করে রাজ্য সরকার। তার পরে এই দিনের নির্দেশের জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের কাজ ফের থমকে গেল বলেই অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। |