কেন্দ্রে আর্জি চামলিংয়ের
৩১-এ সড়ককে জাতীয় প্রকল্প ঘোষণার দাবি
সিকিমের ‘লাইফ-লাইন’ বলে পরিচিত ৩১-এ জাতীয় সড়ক নিয়ে উদ্বিগ্ন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং। সম্প্রতি তিনি এই জাতীয় সড়ককে দেশের ‘জাতীয় প্রকল্প’ হিসাবে ঘোষণার দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানিয়েছেন। সিকিম প্রশাসন সূত্রের খবর, এই জাতীয় সড়কের মাধ্যমেই শিলিগুড়ি থেকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে সিকিম। সেখানে বিকল্প জাতীয় সড়কের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত সড়কটির গুরুত্ব আরও বাড়াতে পারলে দুটি সমস্যার হাত থেকে রেহাই মিলতে পারে বলে মনে করছে সিকিম সরকার। প্রথমত, জাতীয় সড়কটির অবস্থা আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে পারে। দুই জাতীয় প্রকল্প হলে বন্ধ, অবরোধের যাতায়াতের সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে সিকিমবাসীর।
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং বলেছেন, “৩১-এ জাতীয় সড়কের গুরুত্ব অপরিসীম। সিকিম এই রাস্তার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। কিন্তু নানা কারণে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সংস্কারের বিষয়টিও রয়েছে। সম্প্রতি দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই জাতীয় সড়ককে জাতীয় প্রকল্প হিসাবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছি। সেই সঙ্গে বিকল্প সড়ক তৈরির বিষয়টি সরকারকে দেখতে বলা হয়েছে। আমরা আশাবাদী।” শিলিগুড়ি থেকে সিকিমের রাজধানী শহর গ্যাংটকের দূরত্ব প্রায় ১২৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে সেবক থেকে সিকিম, পশ্চিমবঙ্গের সীমানা রংপো’র দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটারের মত।
মূলত এই জাতীয় সড়কটির দেখভালের দায়িত্ব আছে সেনা বাহিনীর নিয়ন্ত্রাধীন বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (বিআরও)। কিন্তু বিরিক, লিকুভির, তিস্তাবাজার, রম্ভি, ২৯ মাইল এবং কালীঝোরা এলাকায় রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। পিচের চাদর উঠে বহু জায়গায় পাথুরে রাস্তা বার হয়ে গিয়েছে। সিকিম প্রশাসনের কয়েকজন আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রতি বছর বর্ষার মরশুমে রাস্তাটির হাল অত্যন্ত খারাপ হয়ে যায়। ধসের জেরে অনেক সময়ই রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকে। বিআরও তরফে কাজ করা হলেও তা সন্তোষজনক নয় বলে অভিযোগ। ২০০৮ সালের পর থেকে সিকিমগামী এই সড়কটি পাহাড়ের বন্ধের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তিস্তাবাজার, সেবক, মেল্লি এবং তিস্তাবাজারের একাধিকবার অবরোধে সিকিমের পণ্যবাহী গাড়ি আটক পড়ায় সমস্যা দেখা দেয়। এ দফায় টানা বন্ধের জেরে সিকিমে গ্যাস, পেট্রোল, ডিজেল এবং খাবারের আকাল দেখা দয়। এই পরিস্থিতি চলতে থাকায় রাস্তাটি নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে জনস্বার্থে মামলাও হয়। এই রাজ্যের পাহাড়ের সমস্যার জেরে অবরোধ, বন্ধের আঁচ যেন ৩১-এ জাতীয় সড়কে না পড়ে তা দেখার জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে নির্দেশ দেয় আদালত। এই জাতীয় সড়ক অবরোধে দার্জিলিং পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার শীর্ষ নেতাদের নামে মামলাও হয়। দুই দফায় সেনা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গেও মোর্চার সমর্থকদের গোলমাল হয়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় সিকিমবাসীকে।
মূলত চিন, নেপাল, ভুটানের মত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ঘেরা সিকিমে ‘লাইফ লাইন’ বলে পরিচিত রাস্তাটি সেনাবাহিনীর কাছেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে সেনা বাহিনীও যাতে জাতীয় সড়কটিকে জাতীয় প্রকল্প ঘোষণা করা নিয়ে তদ্বির করে সেই বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন খোদ সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে কয়েক দফায় সিকিমের সেনা কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলেছেন পবন চামলিং। সেনা কর্তারাও যাতে বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক অবধি পৌঁছান তার অনুরোধ করেছেন চামলিং। ইতিমধ্যে অবশ্য বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া অবধি এই জাতীয় সড়কের জন্য ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাস্তা চওড়া করা, সংস্কার করা, গার্ডওয়ালের মত কাজ ওই টাকায় হচ্ছে। ওই টাকার মধ্যে ৫১ কোটি টাকা দিয়ে কালিঝোরা থেকে লোহাপুল অবধি রাস্তা চওড়া করা হবে। বাকি টাকার মধ্যে ১৭ কোটি টাকায় রানিপুল থেকে গ্যাংটক অবধি সড়কটির সংস্কারের কাজ হবে। এ ছাড়া রংপোতে নতুন এক কিলোমিটার লম্বা একটি সেতুরও কাজ তৈরির চিন্তভাবনা চলছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.