চরে বিএসএফের প্রহরা, খুশি চাষিরা
বশেষে চরের জমিতে পা পড়ল সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। মাসখানেক ধরে পদ্মার ওপারের চরে রীতিমত মাচা বেঁধে নজরদারি চালাচ্ছেন তাঁরা। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় খুশি সীমান্তের চাষিরাও।
বিএসএফের ৯১ নম্বর ব্যাটেলিয়নের এক কর্তা বলেন, “এর আগে চর নিয়ে বহু সমস্যা হয়েছে। বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হানার শিকার হয়েছে চর এলাকা। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে কাছারিপাড়া, মধুগাড়ি ও বাউসমারি এলাকায় পদ্মার ওপারে রীতিমত মাচা করে চব্বিশ ঘণ্টা ধরেই নজরদারি চালানো হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে গ্রামবাসীরা আমাদের পাশে আছেন।”
হোগলবেড়িয়ার মধুগাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পদ্মার ওপারের চরে ভারতের প্রায় দু’হাজার একর জমি রয়েছে। সেখানে চাষাবাদ করেন সীমান্তের অন্তত শ’পাঁচেক চাষি। তাঁদের সকলেরই অতীত অভিজ্ঞতা বড়ই তিক্ত। চাষিরা জানান, বাংলাদেশের দুষ্কৃতীদের দাপটে জমির ফসল তাঁরা ঘরে তুলতে পারতেন না। বিএসএফের তরফে কোনও নজরদারি না থাকার সুযোগে অবাধে তান্ডব চালাত বাংলাদেশি দুর্বৃত্তেরা। এ পারে দাঁড়িয়ে সেই তান্ডব দেখা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না সীমান্তবাসীদের।
গত ২৬ জানুয়ারি চর থেকে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা ফসল কেটে নিয়ে যাওয়ায় বিএসএফের সঙ্গে বিরোধও বাঁধে চাষিদের। গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে বিএসএফ থানায় অভিযোগ জানায়। বিএসএফের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ জানান গ্রামবাসীরা। এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে গ্রামবাসী ও বিএসএফের সম্পর্ক এক সময় তলানিতে ঠেকে। তারপর চর এলাকায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্তে স্বভাবতই খুশির গ্রামের লোক।
কাছারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তথা করিমপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ শঙ্কর মণ্ডল বলেন, “সীমান্তের মানুষের সঙ্গে বিএসএফের সুসম্পর্ক থাকাটাই জরুরি। কিন্তু চরে বাংলাদেশি দুর্বৃত্তদের হানাকে ঘিরে বেশ কয়েকবার চাষিদের সঙ্গে বিরোধ বেধেছিল তাঁদের। চাষিদের দাবি ছিল চরে গিয়ে নজরদারি চালাক বিএসএফ। এই নিয়ে বহু জায়গায় দরবারও করা হয়েছিল। অবশেষে সেই দাবি পূরণে খুশি চাষিরা।” শঙ্করবাবুর কথায়, “পদ্মার এ পারে পাহারা দেওয়ার জন্য বিএসএফের নজরদারি চৌকি আছে। কিন্তু চর এলাকায় কিছুই নেই। তাই গ্রামবাসীরা উদ্যোগী হয়ে ওঁদের জন্য মাচাও তৈরি করে দিয়েছেন।”
নীরেন সরকার কিংবা ফটিক মণ্ডলদের কথায়, “পদ্মা এক সময় আমাদের ভিটেমাটি গিলেছে। তারপর ওপারে চর জেগে ওঠায় সেই জমিতেই চাষাবাদ করে কোনওমতে দিন গুজরান করি। কিন্তু সেখানেও বাঁধ সাধছিল ওপারের দুষ্কৃতীরা। সম্বত্‌সর হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ফসল ফলাতাম আমরা। আর সেই ফসল কেটে নিয়ে চলে যেত ওরা। বহুবার এই নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। বিএসএফকেও একাধিকবার পাহারা দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ভাবেই পদ্মার ওপারে যেতে চাইত না তারা। এতদিন পরে তাঁরা ওপারে যাওয়ায় আমরা খুশি। এবার অন্তত নিজেদের ফসল ঘরে তুলতে পারব।”
করিমপুর ১-এর বিডিও তাপস মুখোপাধ্যায় বলেন, “চর থেকে প্রায়ই ফসল কেটে নিয়ে যেত বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা। এই নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকেওে আমরা সমস্যার কথা জানিয়েছিলাম। তবে বিএসএফ এখন চরের মাঠে গিয়ে দিনভর নজরদারি চালাচ্ছে। আশা করা যায় তাতে সমস্যা মিটবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.