|
|
|
|
পাশেই নদী, রয়েছে নলকূপও, তবু নির্জলা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে কাঁসাই নদী। অথচ, গ্রামের নলকূপগুলোয় জল উঠছে না। খড়্গপুর ১ ব্লকের বড়কোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু গ্রামে এই পরিস্থিতি। স্থানীয়দের বক্তব্য, গ্রামের পাশে একটি পাম্প হাউস রয়েছে। এটি একটি কারখানার পাম্প হাউস। নদীর জল পাম্পে করে তুলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ওই কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই পাম্প হাউসটি তৈরি হওয়ার পর থেকেই গ্রামে এমন সমস্যা শুরু। বাড়ির নলকূপে আর জল ওঠে না। সমস্যা সমাধানের দাবিতে বৃহস্পতিবার গ্রামবাসীরা ওই পাম্প হাউসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে পাম্প হাউসের সামনে পুলিশি টহলও চলে।
সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন খড়্গপুর ১ ব্লকের বিডিও সুভেশ বেরা। তাঁর কথায়, “ক্ষোভ স্বাভাবিক। নদীর পাশেই গ্রাম। অথচ, গ্রামবাসী জলের জন্য সমস্যায় পড়ছেন, এমনটা হতে পারে না। ঠিক কী জন্য এই পরিস্থিতি তা খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হবে।” |
|
গরম না পড়তেই জল-সঙ্কট জিনশহরে। —নিজস্ব চিত্র। |
দুপুরে গ্রামে এসেছিলেন খড়্গপুর লোকাল থানার ওসি অভিজিত্ বিশ্বাস। সমস্যা নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়। ওসি বলেন, “পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।” গ্রামবাসীর অবশ্য বক্তব্য, আগেও সমস্যার কথা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তবে আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই মেলেনি। স্থানীয় বাসিন্দা নিখিল বাকলির কথায়, “এলাকার প্রায় প্রতিটি পরিবারই সমস্যায় পড়েছে। বাড়িতে নলকূপ রয়েছে। অথচ, জল উঠছে না। জলস্তর দ্রুত নেমে যাওয়ায় এই অবস্থা। এক বালতি জলের জন্য বহু দূর যেতে হচ্ছে।” বন্দনা ঘোড়ই বলেন, “পাম্প হাউস তৈরি হওয়ার পর থেকেই জলের সমস্যা চলছে। বিকল্প কোনও ব্যবস্থাও নেই।”
বড়কোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যেই রয়েছে জিনশহর, বালিহাটি, মোহনপুর, উত্তর সিমলা প্রভৃতি গ্রাম। জলের সমস্যা রয়েছে সর্বত্র। ক’বছর আগে খড়্গপুর শিল্পতালুকে ‘বেঙ্গল এনার্জি’ নামে একটি কারখানা গড়ে ওঠে। জিনশহরের পাশেই সেই কারখানার একটি পাম্প হাউস রয়েছে। নদীর জল পাম্পে তোলা হয়। তারপর তা পাইপ লাইনের মাধ্যমে কারখানায় পৌঁছয়। স্থানীয়দের বক্তব্য, পাম্প তৈরির সময় আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, গ্রামে সজলধারা প্রকল্প করা হবে। প্রত্যেক এলাকায় ট্যাপকল থাকবে। কল খুললেই জল মিলবে। কিন্তু আশ্বাসমতো কাজ হয়নি। বৃহস্পতিবার যাঁরা বিক্ষোভ দেখান, তাঁদের মধ্যেই ছিলেন অরুণ ঘোষ, অসিত দাস মহাপাত্ররা। বালিহাটির বাসিন্দা অরুণ বলেন, “সবে গরম পড়তে শুরু করেছে। এখন থেকেই জলের এমন সমস্যা চলতে থাকলে আগামী দিনে কী পরিস্থিতি হবে, ভেবে শিউরে উঠছি।” অসিতের কথায়, “কারখানা কর্তৃপক্ষের উচিত, এই এলাকায় জলের ব্যবস্থা করা। না হলে স্থানীয় মানুষকে চরম সমস্যায় পড়তে হবে।” গ্রামবাসীদের দাবির সঙ্গে একমত স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য বিষ্ণুপদ সিংহ। তাঁর কথায়, “গ্রামে জল প্রকল্প করার আশ্বাস দিয়েছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। তা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ফের ওঁদের সঙ্গে কথা বলব।”
গ্রামবাসী অবশ্য জানিয়েছেন, আর প্রতিশ্রুতি নয়, এ বার তাঁরা কাজ দেখতে চান। |
|
|
|
|
|