রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় • উলুবেড়িয়া |
বাড়িতে অতিথি এসেছেন। থালা ভর্তি খাবার। বিনীত ভাবে অতিথিকে প্রশ্ন করলেন গৃহকর্ত্রী, “আর কিছু নেবেন?” উত্তর এল “জল”। তারপরেই আমতা আমতা করে গৃহকর্ত্রীর উত্তর “আজ্ঞে, জলটাই কম আছে।”
গল্প নয়। বাস্তবেই এমনই অবস্থা হাওড়ার বালি জগাছার চামরাইল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। সুন্দর সাজানো গোজানো গ্রাম। কিন্তু জল নেই। অবস্থা এমনই যে গাঁটের কড়ি খরচা করে কিনতে হচ্ছে জল। তা-ও প্রায় মারামারি করে! |
চামরাইল পঞ্চায়েতের অর্ন্তগত রামকৃষ্ণপল্লি, রবীন্দ্রপল্লি, বিবেকানন্দপল্লি, দক্ষিণ চামরাইল প্রভৃতি এলাকায় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এই পঞ্চায়েত এলাকায় বাস হাজার ছ’য়েক মানুষের। টিউবওয়েলও আছে। কিন্তু সেই জল আবার রক্তবর্ণ। ফলে পানের অযোগ্য। স্থানীয় বাসিন্দা অর্চনা দাস বলেন, “গোটা চামরাইল এলাকাতেই পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। গরমকালে অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর হয়। টিউবওয়েলের জল খেলে পেটের অসুখ হয়।” চামরাইল দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা শম্ভু দাস ও রানি হালদার জানালেন, হাওড়া ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের জলের গাড়ি এলাকায় মাসে তিন বার আসে। সেখান থেকেই জল নিয়ে বাড়িতে মজুত করে রাখতে হয়। মাথা পিছু জলের দাম ৫০ টাকা। সেটাও মাত্র কয়েকটি জারের হিসেবে।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, প্রায় শ’চারেক পুরুষ ও মহিলা জলের জন্য দীর্ঘ দিন লাইন দিয়ে অপেক্ষা করছেন। বেলা ১টায় জলের গাড়ি ঢোকার কথা থাকলেও গাড়ি ঢুকল বিকেল ৪টেয়। তারপর জল নেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, কয়েক দিন আগে জলের সমস্যা মেটাবার জন্য পাম্পহাউস করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ওই এলাকায়। দেখা হয়েছে জমি। চামরাইল পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সুভাষ রায় বলেন, “এলাকায় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। সমস্যা সমাধানের জন্য এলাকায় একটি পাম্পহাউস তৈরির কথা হয়েছে। কয়েক কোটি টাকা খরচা হওয়ার কথা। বিষয়টি স্থানীয় বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানানো হয়েছে।” পাম্পহাউস তৈরির চিন্তাভাবনা যে চলছে সে কথা জানিয়েছেন বালি জগাছার বিডিও সুনন্দ ঘোষও। রাজীববাবু বলেন, “খুব শীঘ্রই ওই এলাকায় পাম্পহাউস তৈরির কাজ শুরু হবে। এ ব্যাপারে পুরমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি।” |