|
|
|
|
মনমোহনের উন্নয়ন-বিশ্লেষণ: গুজরাতকে পিছনে ফেলেছে বিহার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
তিনি ট্যুইটারে রাজ্যগুলির উন্নয়ন সূচক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে লিখেছেন, দেশে সব থেকে দ্রুত গতিতে উন্নয়ন করছে যে রাজ্যটি, তার নাম বিহার। এই প্রশংসায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার খুশি তো হবেনই। আর যদি সেই ট্যুইটারের লেখকের নাম হয় ডঃ মনমোহন সিংহ, তবে নীতীশ যে খুশিতে আট খানা হবেন এ তো বলাই বাহুল্য। কারণ নীতীশের কাছে মনমোহন শুধুই দেশের প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদও। অর্থশাস্ত্রী মনমোহনের সার্টিফিকেট পেয়ে খুশি নীতীশ প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি।
নীতীশের আত্মশ্লাঘার আরও বড় কারণ, ‘উন্নয়নের প্রতীক’ তকমা যাঁর গায়ে লাগিয়ে সংবাদমাধ্যম সরব, দেশীয় রাজনীতিতে নীতীশের সেই প্রতিদ্বন্দ্বী নরেন্দ্র মোদীকে পিছনে ফেলে তিনি এগিয়ে যাওয়ায়। এনডিএ-র শরিক হয়েও মোদীকে নিয়ে নীতীশের অস্বস্তি কারও অজানা নেই। মনমোহনের প্রশংসা নীতীশকে কংগ্রেসের আরও কাছে এনে দিল কি না তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
কারণ, মনমোহন লিখেছেন, উন্নয়ন সূচকের নিরিখে গুজরাতকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে বিহার। মনমোহন তাঁর ট্যুইটারে তুলনামূলক বিচারে দেখিয়েছেন, গুজরাতে বৃদ্ধির হার ৯.৩ শতাংশ। বিহারের সেই হার এই মুহূর্তে ১০.৯ শতাংশ। বিহারের আরও বড় কৃতিত্ব, ২০০৬-০৭ থেকে ২০১০-১১, এই ক’বছরে তাদের বৃদ্ধির হার এই জায়গায় এসে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, দুর্বল রাজ্য বিহারের পরিস্থিতি এখন বদলে গিয়েছে। বিহার অন্য রাজ্যের থেকে অনেক স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। প্রধানমন্ত্রী বিহারের প্রশংসা করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, পঞ্জাব, কেরল, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা-সহ বিভিন্ন রাজ্যের নাম উল্লেখ করেছেন। জানিয়েছেন, শুধু গুজরাত নয়, এই সব রাজ্যগুলিকেও পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে বিহার।মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, বিহারের উন্নয়নের গতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশ্লেষণে অভিভূত নীতীশ।
প্রধানমন্ত্রীর বিহার নিয়ে প্রশংসা এবং নীতীশ কুমারের ধন্যবাদ জ্ঞাপনে রাজনৈতিক স্তরে বেড়ে গিয়েছে জল্পনা। এনডিএ-র শরিক হয়েও রাষ্ট্রপতি পদে নীতীশ সমর্থন জানান প্রণব মুখোপাধ্যায়কে। তখন নীতীশের বক্তব্য ছিল, এনডিএ সর্বসম্মত ভাবে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ঠিক করতে পারেনি। তাই প্রণববাবুকে সমর্থন জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পরে রাষ্ট্রপতি হয়ে প্রণববাবুও নীতীশের অনুরোধে বিহার ঘুরে গিয়েছেন। সম্প্রতি ২০১৩-১৪ সালের আর্থিক বাজেট পেশ করতে গিয়ে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনর্গঠন নিয়ে অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম জানিয়ে দিয়েছেন, এই উৎকর্ষ কেন্দ্রের পাশেই তাঁরা আছেন। নালন্দা পুনর্গঠন কার্যত নীতীশের প্রয়াসেরই ফল। কেন্দ্রীয় বাজেটে তার স্বীকৃতি পেয়েও খুশি নীতীশ কেন্দ্রীয় বাজেটের প্রশংসা করেন। মোদী সম্পর্কে নীতীশের ঘোষিত আপত্তি এবং মোদী নিয়ে বিজেপি-র সাম্প্রতিক জাতীয় কর্মসমিতি বৈঠকে নাচানাচি, এনডিএ সম্পর্কে নীতীশকে ভাবাতে বাধ্য করবে। কংগ্রেস সেই সুযোগের অপেক্ষায়। মনমোহনের প্রশংসা তারই অঙ্গ বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশের দাবি। যদিও নীতীশ তা মনে করেন না। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের
কথায়, নীতীশ এই বিশ্লেষণকে অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিংহের বিশ্লেষণ হিসেবেই দেখছেন। |
|
|
|
|
|