‘প্রেমিক’-এর বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল। সোমবার রাতে কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে চিকিৎসাধীন ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাড়ি কোচবিহারের পূর্ব গোপালপুর এলাকায়। তিনি বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। হাতিডোবা গ্রামে প্রেমিকের বাড়িতে তিনি অগ্নিদদ্ধ হন। বাড়ির লোকেরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান।
ঘটনার পরে লক্ষ্মীর বাবা অক্ষয় অধিকারী মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে বাড়িতে নিয়ে ত্রিপুরায় কর্মরত হাতিডোবা গ্রামের বাসিন্দা এক যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে যুবকের পরিবারের লোকদের বিরুদ্ধে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে চেষ্টার অভিযোগ পুলিশে জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্তও শুরু করে। মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে তরুণী প্রেমিকের মায়ের বিরুদ্ধে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার কথা জানান বলে পুলিশের দাবি। তাঁর মৃত্যুর পর খুনের মামলাও শুরু করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকালে অভিযুক্ত যুবকের মা মণিকা বর্মনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “তদন্ত চলছে। এক জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের খোঁজা হচ্ছে।”
পুলিশ ও মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার সঙ্গে অভিযুক্ত যুবক চন্দন বর্মনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করে চন্দন গত ১৬ ডিসেম্বর তরুণীকে নিজের বাড়িতে তোলেন। গ্রাম্য সালিশি সভায় নগদ দেড় লক্ষ টাকা, বাইক এবং সোনার গয়না যৌতুক দেওয়ার ব্যাপারে মেয়ের বাড়ির লোকজন রাজি হন। লক্ষ্মীকে নিজের বাড়িতে রেখে কর্মস্থলে ত্রিপুরায় চলে যান ওই যুবক। দু’মাস পরে বিয়ে হবে বলে ঠিক হয়। কিন্তু কথা মত বিয়ে না হওয়ায় গোলমাল শুরু হয়। তার মধ্যেই ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই তরুণীকে প্রেমিকের বাড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
মৃতার এক আত্মীয় লেন, “পরিকল্পিতভাবে চন্দনের বাড়ির লোকজন ওকে আগুনে পুড়িয়ে মারার ছক কষেছিল। আমরা দোষীদের কড়া শাস্তি চাই।” অভিযুক্ত চন্দনের কাকা মদন বর্মন অবশ্য বলেন, “মেয়েটি নিজেই ভাইপোর বাড়িতে উঠেছিল। বিয়ের কথা বার্তাও এগোয়। এরমধ্যেই সে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে জানতাম।” |