বিএসএফের গুলিতে এক গ্রামবাসীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সোমবার রাতে দিনহাটার শুকারুরকুঠি সীমান্ত এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম মুজিবর রহমান (৪১)। তাঁর বাড়ি শুকারুরকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের কিসামত করলা এলাকায়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, রাতে তিনি বাড়ির কাছেই বোরো ধানের খেতে জল দিতে গিয়েছিলেন। রাত নয়টা নাগাদ জমিতে যাওয়ায় বিএসএফের এক জওয়ান প্রশ্ন তোলেন। কথা কাটাকাটির মধ্যে বিএসএফের এক জওয়ান গুলি চালালে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কোচবিহার জেলা হাসপাতালে রাত দেড়টা নাগাদ তিনি মারা যান। দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “বিনা প্ররোচণায় বিএসএফ গুলি চালানোয় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। দায় এড়াতে রবার বুলেটে জখম হয়ে মৃত্যুর কথা সাজানো হচ্ছে। আমরা এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের কথা প্রশাসনকে বলেছি।”
মঙ্গলবার দিনহাটা থানায় বিএসএফের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের ভাই গোলাম মুস্তাফা। তিনি বলেন, “দাদা জমিতে জল দিতে গিয়েছিল। তর্কাতকির মধ্যে এক জওয়ান গুলি চালায়।” বিএসএফ অবশ্য অভিযোগ মানতে চায়নি। বাহিনীর তরফে দাবি করা হয়েছে, ওই ব্যক্তি গরু পাচারে জড়িত ছিলেন। গুলি নয়, আত্মরক্ষার জন্য রবার বুলেট চালাতে বাধ্য হন এক জওয়ান। রবার বুলেট মজিবরের পেটে লাগায় ব্যাপক রক্তক্ষরণের জেরে তাঁর মৃত্যু হয়। জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল, “বিএসএফ ও মৃতের পরিবার দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।”
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে কাঁটাতারের বেড়াহীন এলাকা দিয়ে গরু পাচারের জন্য দুস্কৃতীদের একটি দল জড়ো হয়। দলে অন্তত ৪০ জন ছিলেন। টহলদারি দায়িত্বে থাকা এক জওয়ান বাঁধা দিতে গেলে তাঁকে মারধরের চেষ্টা করেন কয়েকজন। নিরুপায় হয়ে আত্মরক্ষায় বরার বুলেট চালান ওই জওয়ান। রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বিএসএফের কোচবিহার সেক্টরের ডিআইজি অশোক কুমার বলেন, “বাইরে আছি। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।” বিএসএফের এক কর্তার দাবি, রক্তক্ষরণ বন্ধে সময়মত ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়ত মৃত্যু এড়ানো যেত। এই নিয়ে গত নভেম্বর মাস থেকে কোচবিহারের সীমান্ত এলাকায় ছয় জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল। তারমধ্যে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। |