আপাতত জনজীবন স্বাভাবিক। কিন্তু যে কোনও মুহূর্তে জঙ্গলমহলে ফের অশান্তির আশঙ্কা থাকায় আপাতত পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে না বলে আশ্বাস দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সরকারি সূত্রের খবর, সোমবার নয়াদিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশের ডিজি, মুখ্য সচিবদের নিয়ে বৈঠকে মাওবাদী সমস্যা নিয়ে আলোচনার পরে কেন্দ্রের তরফে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিদের ওই আশ্বাস দেওয়া হয়। মূলত, মাওবাদী সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য ওই বৈঠক ডেকেছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব রাজকুমার সিংহ। সম্প্রতি গোয়েন্দা রিপোর্টে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে জঙ্গলমহলে নাশকতার চেষ্টা হতে পারে। সেই বিষয়টিও এই আলোচনায় ওঠে। এর পরেই কেন্দ্রের তরফে আপাতত পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে না বলে আশ্বাস দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, “গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদীরা ফের সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। জঙ্গলমহলের পুরনো ঘাঁটিগুলিতে তাদের সক্রিয়তা বাড়ছে। সুযোগ পেলেই তারা রাজনৈতিক দলের কর্মী ও পুলিশ বা কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরে হামলা চালাতে পারে।’’ কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকার চাইলে কয়েক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাহাড়ে পাঠানো হতে পারে। বাকি বাহিনী পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়াতেই থাকবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “মাওবাদী দমনের জন্য যে বাহিনী মোতায়েন রয়েছে তার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্যও বাড়তি বাহিনী পাঠাতে তৈরি কেন্দ্র। রাজ্যের তরফ থেকে অনুরোধ এলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” রাজ্য অবশ্য এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াই পঞ্চায়েত ভোট করতে অনড়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, বর্তমানে জঙ্গলমহলে ৪২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরে মাওবাদীরা ফের নাশকতার চেষ্টা চালায়। কিন্তু, কিসেণজি নিহত হওয়া ও একাধিক মাওবাদী নেতানেত্রীর আত্মসমর্পণের পরে পরিস্থিতি অনেকটাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যে জঙ্গলমহলে খুনোখুনি প্রায় দৈনন্দিন ঘটনা হয়ে উঠেছিল তা থামায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন সাধারণ মানুষ। |