প্রশ্নপত্রের উপরেই লিখে দেওয়া আছে, বানান ভুলের জন্য নম্বর কাটা যাবে।
অথচ মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রেই ভুল বানানের ছড়াছড়ি। জটিল কোনও শব্দ নয়, সাধারণ কিছু বানানও ভুল ছাপা হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশ্নপত্রে। গোটা বছর সময় পেয়েও কেন নির্ভুল প্রশ্নপত্র তৈরি করা যায় না, পর্ষদ-কর্তৃপক্ষের কাছে এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। জবাব এবং দায় এড়ানোর চেষ্টায় প্রশাসক বলছেন, “বানানের পরীক্ষা তো আর হচ্ছে না!” মঙ্গলবার ছিল মাধ্যমিকের জীবনবিজ্ঞান পরীক্ষা। একটি প্রশ্ন নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টিরও অভিযোগ উঠেছে। যদিও পর্ষদ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এ দিন জীবনবিজ্ঞানের প্রশ্নপত্রে দেখা যাচ্ছে: ‘স্বাস্থ্য’ হয়েছে ‘স্বাস্থ’, ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে ‘ক্ষতিগ্রস্থ’, ‘উৎপত্তিস্থল’ হয়েছে ‘উৎপতিস্থল’, ‘কোষ’ হয়েছে ‘কোশ’ ইত্যাদি। এর মধ্যে স্বাস্থ্য ছাড়া অন্য কোনও ভুল নাকি পর্ষদের নজরেই পড়েনি! পর্ষদ মাধ্যমিক পরীক্ষার বন্দোবস্ত করার জন্য সময় পায় এক বছর। এই দীর্ঘ সময়ে যাচাইয়ের অজস্র সুযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রশ্নপত্রে এত ভুল কেন?
পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এ তো আর বানানের পরীক্ষা হচ্ছে না! হচ্ছে জীবনবিজ্ঞানের পরীক্ষা।”
তা হলে প্রশ্নপত্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের ভুল বানানের জন্য নম্বর কাটা হবে কেন?
ওই নির্দেশ থেকে পুরোপুরি ঘুরে গিয়ে প্রশাসকের অভয়, “বানান ভুলের জন্য নম্বর কাটা হবে না।”
সোমবার অঙ্ক পরীক্ষায় হিন্দি মাধ্যমের একটি প্রশ্নে ভুল ছিল বলে স্বীকার করে নিয়েছেন প্রশাসক। আর মঙ্গলবার প্রশ্নপত্রে বানান ভুলের সঙ্গে সঙ্গে ভাষাতেও ভুল ধরা পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, জীবনবিজ্ঞানে বাংলা মাধ্যমের একটি প্রশ্নের সঙ্গে তার ইংরেজি তর্জমার মিল নেই। বাংলা মাধ্যমের প্রশ্নে নাইট্রোজেন-ঘটিত কয়েকটি বর্জ্য পদার্থের নাম চাওয়া হয়েছে। ইংরেজি তর্জমায় যে-প্রশ্নটি আছে, সেখানে চাওয়া হয়েছে নাইট্রোজেন-ঘটিত রেচন পদার্থের নাম। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, রেচন ও বর্জ্য পদার্থ এক নয়। প্রশ্নটিতে আছে দু’নম্বর। অনেক পরীক্ষার্থীই ওই প্রশ্নের উত্তর লিখতে গিয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। তাদের নম্বরের কী হবে?
প্রতিটি পরীক্ষার পরের দিন সেই বিষয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন পর্ষদকর্তারা। আজ, বুধবার জীবনবিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠক হবে। প্রশ্নটি নিয়ে সেখানে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন পর্ষদের প্রশাসক। যদিও তাঁর দাবি, “প্রশ্নটি একদম ঠিক।” শিক্ষক-শিক্ষিকারা অবশ্য জানান, বাংলা প্রশ্নটিতে ভাষায় গোলমাল আছে। তাই অনেক ছাত্রছাত্রী বিভ্রান্ত হয়েছে। |