দুষ্কৃতীকে ধাওয়া, গুলিতে জখম হলেন পুলিশকর্মী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা |
ছিনতাইকারীদের ধাওয়া করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হলেন এক পুলিশকর্মী। সোমবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ভগবানপুর থানা এলাকার খেজুরতলায় এগরা-বাজকুল রাস্তায় এই ঘটনার পরে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময়ও হয়। জখম কনস্টেবল বছর বিয়াল্লিশের উত্তম মণ্ডল কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর চোয়ালে গুলি লেগেছে। সাংসদ থাকাকালীন সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠের দেহরক্ষী ছিলেন উত্তমবাবু। মাত্র কয়েক মাস আগে ভগবানপুর থানায় বদলি হয়েছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভগবানপুরের মহম্মদপুরের বাসিন্দা বাদল বেরা সোমবার রাত ১১টা নাগাদ বাইকে চেপে বাজকুলে যাচ্ছিলেন। খেজুরতলার কাছে জনা চারেক দুষ্কৃতী তাঁর মোটর সাইকেল আটকে ছিনিয়ে নেয় মোবাইল ও টাকা। ওই দুষ্কৃতীরা একটি লরিকে আটকানোরও চেষ্টা করেছিল। কিছু দূরে কলাবেড়িয়ায় গিয়ে বাদলবাবু ও ওই লরির চালক স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘটনাটি জানান। |
|
জখম পুলিশকর্মী। |
রাত ১২টা নাগাদ ভগবানপুর থেকে পুলিশ ও অন্য দিকে কলাবেড়িয়া থেকে স্থানীয় কয়েকজন খেজুরতলায় আসেন। পালানোর দু’দিকই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুষ্কৃতীরা গুলি ছুড়তে শুরু করে। একটি গুলি পুলিশের গাড়ির কাচ ভেদ করে উত্তমবাবুর চোয়ালে গিয়ে লাগে। পাল্টা লড়াইয়ে না গিয়ে উত্তমবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর ভগবানপুর থানা থেকে আরও কয়েকজনকে নিয়ে ফের ঘটনাস্থলে আসে তারা। ফের শুরু হয় গুলির লড়াই। দুষ্কৃতীরা বোমাও ফাটায়। লোক বাড়ছে দেখে এক সময় গ্রামের ভিতরের রাস্তা ধরে পালিয়ে যায় তারা। দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার কিছু পরে আশপাশের থানা থেকে বড় পুলিশবাহিনী এসে পৌঁছয়। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মেদিনীপুর সার্কেলের ডিআইজি লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা ও জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন। ডিআইজি বলেন, “গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।” |
|
ভগবানপুরে র্যাফের টহলদারি। |
গত প্রায় এক বছর ধরে খেজুরতলা ও সংলগ্ন এলাকায় মারধর, ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে। তবে, কোনও ক্ষেত্রেই কড়া ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ শাসকদল তৃণমূলের নেতাদের একাংশের প্রশ্রয়েই দুষ্কৃতীদের এই বাড়বাড়ন্ত। সিপিএমের ভগবানপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক সত্যরঞ্জন দাস বলেন, “স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতার মদতে ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। কাদের প্রশ্রয়ে এই সব হচ্ছে তা তদন্ত করে দেখুক পুলিশ।” ভগবানপুরের তৃণমূল নেতা হারুন রশিদ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “সিপিএম এবং দলেরই কিছু লোক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই সব অপপ্রচার করছে। দুষ্কৃতীদের প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বরং আমরা দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করেছি।”
এলাকায় সমাজবিরোধী কার্যকলাপের বাড়বাড়ন্তে পুলিশের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ডিআইজি।
|
—নিজস্ব চিত্র। |
|