আজই শেষ চারের টিকিট পেতে চায় ইস্টবেঙ্গল |
দার্জিলিং মোড় থেকে মাটিগড়ার দিকে দু’পা হাঁটলেই মেরি কমের যে বড় পোস্টার ঝুলছে, তাতে লেখা ‘আওয়ার কম-মিটমেন্ট টুওয়ার্ডস নেশন’। মঙ্গলবার সাতসকালে বিএসএফ ক্যাম্পের মাঠে প্র্যাক্টিসে যাওয়ার পথে পোস্টারটা মর্গ্যানের চোখে পড়েছে কি না জানা নেই। তবে লাল-হলুদ কোচ কদমতলার দ্রোণাচার্য স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে একটা ‘কমিটমেন্ট’ নিশ্চয়ই করেছেন। হাজার অনীহা নিয়ে শিলিগুড়িতে শিল্ড খেলতে এলেও, সেটা ইস্টবেঙ্গলের ট্রফিশালের শোভা বর্ধন না করা পর্যন্ত নিজের নতুন গুরুগম্ভীর মেজাজ বজায় রাখবেন!
আপাদমস্তক ভদ্রলোক মর্গ্যানের মেজাজে এত পরিবর্তন কখনও দেখা যায়নি। হাসি-ঠাট্টার যে সুন্দর পরিবেশ ব্রিটিশ কোচ নিজের আশপাশে বানিয়ে রাখতেন, সেটা যেন উধাও! ওএনজিসি ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গল কোচের নতুন কৌশল নয় তো? নাকি উদ্বোধনী ম্যাচে গণ্ডগোলের জেরে যে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে তাঁর দলকে, এটা তারই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া? বুধবারের ম্যাচে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগে একরাশ বিরক্তি মর্গ্যানের গলায়, “এ রকম টুর্নামেন্ট কোথাও দেখিনি। শুনিওনি। আই লিগ চলছে। কলকাতা লিগ চলছে। মাঝপথে আবার শিল্ডও খেলব!” |
প্রয়াগ ম্যাচে দর্শক মর্গ্যান। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক |
মর্গ্যানের বিরক্তির কারণ অনেক। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের জঘন্য মাঠ থেকে শুরু করে ক্রীড়াসূচি নিয়ে আইএফএ-র টালবাহনা, স্থানীয় আয়োজকদের চূড়ান্ত গাফিলতিকিছুই তো বাদ নেই। এ দিন আবার প্র্যাক্টিস মাঠ নিয়েও ভুগতে হল। যে মাঠ দেওয়া হয়, সেটা প্র্যাক্টিসের যোগ্য নয়। এবড়ো-খেবড়ো, কোথাও আবার বড় গর্ত খুঁড়ে রাখা। অগত্যা পাশের গল্ফ কোর্সে অনুশীলন সারলেন চিডি-পেনরা। মর্গ্যান বললেন, “পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক না কেন, আমরা কালই সেমিফাইনালের রাস্তা পরিষ্কার করে ফেলতে চাই। যাতে গ্রুপের শেষ ম্যাচে ফুটবলারদের উপর চাপ না থাকে।”
কিন্তু কাজটা কি সহজ? দিল্লিতে বছরের শুরুতেই ওএনজিসি-র কাছে হেরে বহু সমালোচনার মুখে পড়তে হয় মর্গ্যান-ব্রিগেডকে। আর এখন তো ইস্টবেঙ্গলের হৃদপিণ্ড মেহতাব হোসেন-ও নেই। ইয়াঙ্গনে কোভারম্যান্সের ভারতীয় দলে। তা হলে এখানে মেহতাবের ক্লাবের বদলার ম্যাচ জেতার ‘রেসিপি’ কি? ময়নাতদন্তে যা উঠে আসছে:
১) দলের রিমোট কন্ট্রোল পেনের হাতে থাকবে।
২) দু’টো উইং সচল রাখতে শুরুতেই খাবরা-ইসফাককে নামানো হচ্ছে।
৩) মাঠের অসমান বাউন্স-সমস্যা দূর করতে বলের উপর থেকে নজর সরানো কিছুতেই চলবে না। বাঁ দিকে সৌমিক-লালরিনডিকার বোঝাপড়া দিয়ে ওএনজিসি-র দুর্বল দিকটা ভাঙা হবে। কার্যত বিনা প্রস্তুতিতে নামছে ওএনজিসি। কোচ সন্তোষ কাশ্যপ আসছেন ম্যাচের দিন দুপুরে। সময় মতো টিকিট হয়নি তাঁর। এখন দেখার, এগুলোকে মাঠে কতটা কাজে লাগাতে পারে ইস্টবেঙ্গল!
|
যাদের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট তুলতে কালঘাম ছুটে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের সেই পৈলান অ্যারোজকে মঙ্গলবার ৫-০ হারাল প্রয়াগ ইউনাইটেড। চোট-আঘাতে প্রথম দলের ছ’জন ফুটবলারকে বাদ দিয়ে জঘন্য মাঠে খেলেও। গোল করলেন কার্লোস হার্নান্ডেজ, শঙ্কর ওঁরাও, কেন ভিনসেন্ট ও পেনাল্টি-সহ র্যান্টি মাটিন্স দু’টো। তবে পেনাল্টি মারা নিয়ে র্যান্টি-কার্লোসে একদফা নাটক হল। দু’জনেই মারতে চাওয়ায়। যার রেশ ড্রেসিংরুমেও গড়ায়। কোচ সাতৌরির হস্তক্ষেপে ঠান্ডা হন দুই বিদেশি। এ দিকে, মহম্মদ রফিক ম্যাচের দিন রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের চাকরিতে যোগ দিতে কলকাতায় ফিরে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রয়াগ কোচ। |