দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় • কল্যাণী |
মোহনবাগান-৩ (সাবিথ-২, ওডাফা)
পুণে এফসি-০ |
বাবাকে দেওয়া কথা রাখলেন মাত্র মাসখানেক আগেই চরম ধিকৃত সাবিথ।
অধ্যাবসায়ের অভাবএই অপবাদ মুছে দিলেন মছলন্দপুরের শিল্টন পাল।
মোহনবাগান মাঝমাঠ থেকে পাসিং ফুটবলের বর্ণালি দেখালেন পনেরো বছর আগে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ট্রায়ালে ব্যর্থ হয়ে ফেরা নামিবিয়ার কুইনটন।
পঁচিশ গজের ফ্রিকিক থেকে ডান পায়ের জোরালো ইনস্টেপে দর্শনীয় গোল ওডাফার।
মঙ্গলবার কল্যাণীতে চার মারকাটারি এপিসোডের নিট ফল মরসুমের সেরা ম্যাচ খেলে আইএফএ শিল্ডে গড়গড়িয়ে যাত্রা শুরু করল বাগানের বিজয়রথ। জয়লক্ষ্মী যে টিমটার কাছে অধরা হয়ে উঠেছিল, করিম বেঞ্চারিফা-জমানায় সেই দলই চলতি বছরে (২০১৩-র ২৪ জানুয়ারি থেকে) ঘরোয়া লিগ, আই লিগ, শিল্ড মিলিয়ে টানা ১১ ম্যাচ অপরাজিত।
উলটে দেখুন পালটে গিয়েছে মার্কা এই ‘ফিল গুড’ পরিস্থিতি বাগানে আনলেন কে? ওডাফা-সাবিথরা বলছেন, ‘‘করিম ছাড়া আবার কে?” আর বাগানের মরক্কান কোচের প্রতিক্রিয়া, “ছেলেদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে আত্মবিশ্বাস ফেরাতে পেরেছি মাত্র। টুর্নামেন্টটা কিন্তু জিতে ফেলিনি।” |
কোচের আদর অধিনায়ককে। মঙ্গলবার। ছবি: উৎপল সরকার |
সাঁইত্রিশ দিন আগে আই লিগে প্রয়াগ ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে জেতা ম্যাচ ড্র করেছিল মোহনবাগান। দোষ চেপেছিল মালয়ালি স্ট্রাইকার সাবিথের উপর। তামিলনাড়ুতে পুলিশে কর্মরত তাঁর বাবাকে সে রাতে সাবিথ কথা দিয়েছিলেন, এই মরসুমেই গোল করে বাগানকে জেতাবেন। আগের মহমেডান ম্যাচের মতোই (কলকাতা লিগে) ফের এ দিন জোড়া গোল সাবিথের। দু’অর্ধেরই শুরুতে ওডাফা-কুইনটনের সঙ্গে বোঝাপড়ায় দুরন্ত গোল তাঁর। আইএম বিজয়নের রাজ্যের ফুটবলার বলছিলেন, “কোচ বকাঝকা না করে আস্থা রেখেছেন। তাই ফিরলাম।” দুটো গোলের পিছনেই যার অবদান প্রবল সেই কুইনটন সারাক্ষণ সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো অহরহ বলের জোগান দিয়ে গেলেন ওডাফাদের পায়ে।
সামনে চনমনে সতীর্থদের দেখে বাগানের তেকাঠির তলায় অনবদ্য শিল্টনও। মোগা এবং ডুহুর ফ্রিকিক থেকে নিশ্চিত গোল বাঁচালেন। আহত অবস্থায় মাঠ না ছেড়ে লড়ে গেলেন পুরো নব্বই মিনিট। আর এই নব্বই মিনিটে মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে করিম একটাই কাজ করলেন। |
শিলিগুড়িতে আইএফএ শিল্ডের খেলায় প্রয়াগ ইউনাইটেড ও পৈলান অ্যারোজের
ম্যাচে গোল
করছেন প্রয়াগের র্যান্টি মার্টিন্স। ম্যাচে প্রয়াগ ৫-০ গোলে জয়ী হয়। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
প্রথমে ৪-৩-৩ ছকে আক্রমণাত্মক ফুটবলে পেড়ে ফেললেন মোহনরাজদের। মোগার পিছনে ইচেকে সেঁটে দিয়ে পুণের আক্রমণ প্রায় উধাও করে দিলেন। সঙ্গে মিডফিল্ডারদের ক্রমাগত ‘সাফলিং’। ভার্গব, ওডাফা, সাবিথদের ধরতে গিয়ে তাই হিমশিম খেলেন চিকা-ভেঙ্কটেশ-কায়তানোরা। হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসাবে ডেনসন পুণের আক্রমণের বিষ নিলেন শুষে। হারের পর মোগা বলে গেলেন, “প্রথমে গোল খেয়েই ছন্দ হারিয়েছি। রক্ষণও মন্থর হয়ে গেল।”
প্রথম ম্যাচ থেকে স্বস্তির তিন পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেল করিমের বাগান। শুক্রবার ভাইচুংয়ের দলের বিরুদ্ধে জিতলেই তা পাকা হয়ে যাবে।
|
মোহনবাগান: শিল্টন, আইবর, মেহরাজ, ইচে, বিশ্বজিৎ, মণীশ মৈথানি, ডেনসন, কুইনটন (টোলগে), মণীশ ভার্গব (অর্জুন), ওডাফা (রাই), সাবিথ। |