এমন দিনেও মহেন্দ্র সিংহ ধোনির তাপ-উত্তাপ কোথায়?
হাতে ‘বাটার মিল্ক’-এর বোতল দোলাতে দোলাতে সাংবাদিক সম্মেলনে ঢুকলেন। ঢুকেই অস্ট্রেলীয় সাংবাদিককে চিমটি। কী কুক্ষণে ওই সাংবাদিক ধোনিকে বলে বসেছিলেন, “যাক, আপনাকে হাসতে দেখে ভাল লাগছে।” সেকেন্ডের ভগ্নাংশে পালটা এল, “আমাদের অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় আপনারাও খুব হেসেছিলেন!”
অজি সাংবাদিকের ঠোঁটে মুহূর্তে সেলাই। কিন্তু ততক্ষণে পরবর্তী প্রশ্ন উঠে পড়েছে। সৌরভের রেকর্ড পেরিয়ে গেলেন। কেমন লাগছে?
জবাবে এক বারও প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের নাম আনলেন না। “পুরোটাই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো ব্যাপার। হাইপ্ড। আমার ড্রেসিংরুমে কেউ ভাবে না, কে ক’টা ম্যাচ জিতল। কে কাকে ছাপিয়ে গেল। আমাদের কাছে জরুরি হল টেস্ট ম্যাচ জেতা। যত আমরা ধারাবাহিক হব, ততই টিমের ভাল। সংখ্যা নিয়ে আমরা ভাবি না।”
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যেটা হয়নি, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেটাই হচ্ছে। ভারত অধিনায়ক মেনেও নিচ্ছেন। “ক্রিকেটটা এ রকমই। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আমাদের কোনও কিছুই ঠিকঠাক হয়নি। এখানে যেটা হচ্ছে। পঞ্চম বোলারের স্ট্র্যাটেজিটাও খেটে যাচ্ছে।” পাশাপাশি বিদেশে ০-৮-এর বিপর্যয়ের পর যে নিজেদের ক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল, সেটাও সর্বপ্রথম মেনে নিলেন ধোনি। বলে দিলেন, “পরপর হারতে থাকলে মনের উপর এমনিই চাপ বাড়ে। মনে হয়, সত্যিই আমাদের জেতার ক্ষমতা আছে তো? দেখুন, আমরাও মানুষ। সবচেয়ে বড় কথা, দেশের প্রতিনিধিত্ব করি আমরা। চাপে তাই পড়িনি বললে মিথ্যে বলা হবে।”
তবু তো বিতর্ক পিছু ছাড়ে না। অস্ট্রেলিয়ার উপর ‘হামার’ চালিয়ে দেওয়ার পরেও ভারত অধিনায়ক এবং হরভজন সিংহের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে মিডিয়াতে। বলা হয়েছে, চেন্নাই টেস্টে ধোনি উপেক্ষা করেছেন সর্দারকে। এখানেও ধোনির সাফ উত্তর, “টিমে যদি তিন জন স্পিনার থাকে তা হলে এক জন কম ওভার পাবেই। হরভজনের ক্ষেত্রে ওটাই হয়েছে।” তারপরেই অভিজ্ঞ অফস্পিনারের পাশে দাঁড়িয়ে বলছেন, “একটা জুনিয়রের উপর যে রকম চাপ থাকে, তার চেয়ে হরভজনের উপর চাপটা অনেক বেশি। কিন্তু ও দ্রুত উন্নতি করছে।” ঠিক যেমন সহবাগ নিয়ে কোনও সরাসরি মন্তব্যের রাস্তায় হাঁটলেন না। তৃতীয় টেস্টের দলে বীরুকে ছেঁটে ফেলা হবে কি না, ভারত অধিনায়ককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। উত্তর এল, “বলা কঠিন। আমাদের সামনে আর বেশি টেস্ট পড়ে নেই। তার পরই দক্ষিণ আফ্রিকা সফর।”
|
দুই অধিনায়কের ব্যালান্স শিট |
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি
|
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় |
• টেস্ট ৪৫ (দেশে ২৬, বিদেশে ১৯)
• জয় ২২ (দেশে ১৭, বিদেশে ৫)
• হার ১২ (দেশে ৩ বিদেশে ৯)
• ড্র ১১ (দেশে ৬ বিদেশে ৫) |
• টেস্ট ৪৯ (দেশে ২১
বিদেশে ২৮)
• জয় ২১ (দেশে ১০ বিদেশে ১১)
• হার ১৩ (দেশে ৩ বিদেশে ১০)
• ড্র ১৫ (দেশে ৮ বিদেশে ৭) |
‘‘ধোনিকে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক রেখে দেওয়া উচিত।’’ সুনীল গাওস্কর |
|