খুঁড়লে হবে, ড্রেসিং করবে কে, রাস্তা নিয়ে প্রশ্ন উত্তরপাড়ার
পুর এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রাস্তার বেহাল দশায় উত্তরপাড়ার বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস উঠছে।
এক দিকে অনিয়মিত রাস্তা সংস্কারের কাজ, আর অন্য দিকে জলের পাইপ বসানোর জন্য রাস্তা খোঁড়া এই দুইয়ের যুগলবন্দিতে দিশেহারা অবস্থা পথচারী এবং ব্যবসায়ীদের। রাস্তার যে পরিস্থিতি, তাতে করে বড় ট্রাক উত্তরপাড়ায় ঢোকা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তার জেরে ব্যবসায়ীদের মাল আমদানি কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ব্যবসা মার খাচ্ছে। প্রতিদিনই দুর্ঘটনা লেগেই আছে। রাস্তার জেরে বিপাকে পড়েছেন উত্তরপাড়া গাড়ির মালিকেরা, যাঁরা গাড়ি করে অফিস বা ব্যবসার স্থলে যেতে অভ্যস্ত। পুরসভা সূত্রের খবর, উত্তরপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রাস্তা খুঁড়ে মোটা জলের পাইপ বসছে। ওই পাইপ লাইন দিয়ে মূলত উত্তরপাড়ার মাখলা অঞ্চলের জল সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়াও কিছু ওয়ার্ডে জলের পাইপ সংস্কারের কাজ চলছে। উত্তরপাড়া পুরসভার সংযোজিত এলাকা মাখলায় বহু বছর ধরেই জলের সমস্যা। বাম আমল থেকে প্রতিশ্রুতিই মিলেছে। জল পাইনি ওই এলাকার বাসিন্দারা।
কোন পথে যে চলি...। ছবি: দীপঙ্কর দে।
উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার বর্তমান পুর কর্তৃপক্ষও এক দশকের বেশি সময় ধরে বামেদের মতই প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। এখনও ওই এলাকার মানুষদের জলের জন্য লাইনের এ পার, অর্থাৎ ভদ্রকালীর উপরেই নির্ভর করতে হয়। সকালে জ্যারিকেন হাতে সাইকেলে চড়ে নিয়মিত লাইনের এ পারে চলে আসেন মাখলার বাসিন্দারা। পুর কর্তৃপক্ষ সম্ভবত শেষমেশ বুঝেছেন, মাখলায় জলের ব্যবস্থা না করলে আসন্ন গ্রীষ্মে চূড়ান্ত ক্ষোভ দেখা দেবে এলাকায়।
তা ছাড়া, পঞ্চায়েত ভোট সামনেই। পুর এলাকার লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা রয়েছে যেখানে আর ক’দিন পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। পুর এলাকার ক্ষোভ বিক্ষোভের আঁচ সেখানে গিয়েও পড়তে পারে, তা আঁচ করেও পুর কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে জলের লাইন পাতার কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু এই সব রাজনীতির মারপ্যাঁচ বুঝতে রাজি নন, উত্তরপাড়া, ভদ্রকালীর আম-আদমি। তাঁদের সাফ বক্তব্য, কাজ হলে রাস্তা খোঁড়া হবে। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পুরসভার কাজে ন্যূনতম সমন্বয় থাকবে না কেন? উত্তরপাড়ার গুরুত্বপূর্ণ সব রাস্তা খোঁড়া হল। হাসপাতালের সামনের রাস্তাও খোঁড়া হল। জিটি রোডও বাদ পড়েনি। যাঁরা খুঁড়ে গেলেন রোগী নিয়ে আসার স্বার্থে সে রাস্তা ঠিকঠাক ড্রেসিং হল না। কাজ পাওয়া ঠিকাদারের কাজের দেখভালও কেউ করলেন না। তার ফলে রোগীবাহী গাড়ি বা অ্যাম্বুল্যন্সের হাসপাতালে ঢুকতে অসুবিধা হচ্ছে। কারও হেলদোল নেই। রাস্তার যা হাল তাতে করে ওই পথে কোনও হৃদরোগী রোগী এলে অবধারিত ভাবে প্রাণ সংশয় হবে। মাসখানেক হতে চলল রাস্তা খোঁড়া হয়েছে। কবে তা ফের চলার উপযোগী হবে, কেউ জানেন না। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ঘুরপথে যেতে বহুগুণ বেশি ভাড়া চাইছেন রিকশা চালকেরা। পুর এলাকায় এ পর্যন্ত পুরসভা কর্তৃপক্ষ কোনও ভাড়ার তালিকা করে উঠতে পারেনি। প্রতি মুহূর্তে সওয়ারির সঙ্গে বিবাদ চলছে।
স্টেশন রোড, বি কে স্ট্রিট, জয়কৃষ্ণ স্ট্রিট সবেরই বেহাল দশা। বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাই অনেক দিন মেরামত করেনি পুর কর্তৃপক্ষ। তার উপরে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পুরো বিষয়টিকেই জটিল করে তুলেছে। পুরসভার জল বিভাগের অন্যতম মেয়র-ইন-কাউন্সিল অমিতাভ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটা বাস্তব। আসলে উন্নয়নের কাজে কিছু রাস্তা খোঁড়া অনিবার্য ছিল। সবে রাস্তা খোঁড়া হয়েছে। এখনই রাস্তা সারালে মাটি বসে ফের রাস্তা খারাপ হয়ে যাবে। শীঘ্রই রাস্তা সারাইয়ের কাজ করে ফেলা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.