|
|
|
|
চুক্তি-শিক্ষকদের বিক্ষোভে কাঁদানে গ্যাস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
চুক্তি-শিক্ষকদের বিক্ষোভে আজ দুপুরে পটনা বিধানসভার আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে পুলিশকে লাঠি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশের দু’টি জিপ এবং একটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়।
এই ঘটনায় বিধানসভায় বিরোধী দলের তরফে আরজেডি, কংগ্রেস এবং সিপিআই সরকারের বিবৃতি দাবি করে। বিরোধী দলনেতা আরজেডি-র আব্দুল বারি সিদ্দিকি এই ঘটনায় বিধানসভা স্থগিতের আবেদন জানান। বিরোধী দল নেতা বলেন, “বাইরে এ রকম ঘটনা ঘটছে। আপাতত বিধানসভার অধিবেশন বন্ধ করে দেওয়া হোক।” বিরোধীদের দাবি না মেনে স্পিকার উদয়নারায়ণ চৌধুরী বিধানসভা চালিয়ে যান। এরপরে বিরোধীরা ফের সরকারের বিবৃতি দাবি করলে বিদ্যুৎমন্ত্রী বীজেন্দ্র যাদব বলেন, “বিক্ষোভকারীদের হঠাতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের জিপে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে। পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় তা মোকাবিলার জন্য কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। ঘটনাস্থলে জেলাশাসক উপস্থিত আছেন।” |
|
জ্বলছে বাস। মঙ্গলবার, পটনায়। ছবি: পিটিআই। |
ঘটনার শুরু কাল রাতে। বিক্ষোভকারীরা বিধানসভা থেকে দূরে ‘আর ব্লক’ এলাকায় ধর্নায় বসেছিলেন। পুলিশ লাঠি চালিয়ে তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর আজ সকাল থেকে বিধানসভা এলাকায় চুক্তি-শিক্ষকরা ধর্নায় বসেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারী শিক্ষকরা বিধানসভা ভবনের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করতে থাকে। বিক্ষোভকারীদের একাংশ বিধানসভার সামনের গেট ধরে ধাক্কা দিতে থাকে। সেই সময় বিধানসভার অধিবেশন চলছিল। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ আন্দোলনকারীদের হঠাতে পুলিশ লাঠি চালায়। ঘটনাস্থলে তখন উপস্থিত পটনার জেলাশাসক এন সুবর্ণ কুমার এবং সিনিয়র পুলিশ সুপার অমৃতরাজ। পুলিশের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশ বাধ্য হয়ে পাল্টা আক্রমণে যায়। পুলিশ প্রথমে লাঠি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হঠানোর চেষ্টা করে। পিছু হঠে বিক্ষোভকারীরা মিঠাপুর সেতুর উপরে পুলিশের একটি জিপ এবং স্টেশন রোডের কাছে একটি বাস ও একটি জিপে আগুন লাগিয়ে দেয়। একটি ম্যাটাডোর গাড়িও ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। আন্দোলনকারীদের একাংশ বিধানসভার ‘আর ব্লক’ এলাকায় তখনও বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে থাকে। পাশেই পুলিশের সচিবালয় থানা। পুলিশের দিকে বিক্ষোভকারীরা বারে বারেই তেড়ে আসতে থাকে। পরিস্থিতি ঘোরালো হতে পারে ভেবে এরপরেই পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।
রাজ্যে প্রায় আড়াই লক্ষ চুক্তি-শিক্ষক আছেন। দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের দাবি, স্থায়ী শিক্ষকদের সমান কাজ করেও মাত্র ছ’হাজার টাকা বেতন পান তাঁরা। সেখানে স্থায়ী শিক্ষকদের বেতন ৩৫ হাজার টাকা। ঘটনার পরে বিহার পঞ্চায়েত নগর প্রারম্ভিক শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক আনন্দ কৌশল সিংহ বলেন, “আমাদের তরফে আন্দোলন শান্তিপূর্ণই ছিল। পুলিশ বিনা কারণে লাঠি চালায়। পরে আমাদের কিছু উত্তেজিত সমর্থক হয়তো কোথাও কিছু করে থাকতে পারে।” তিনি বলেন, “আমরা স্থায়ী শিক্ষকদের মতোই কাজ করছি। তা হলে সরকার কেন আমাদের বেতনের বিষয়টি ভাববে না। একই কাজের জন্য পারিশ্রমিকও তো একই হওয়া উচিত। এটাই আমাদের মূল দাবি।”
কয়েক মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে তাঁর অধিকার যাত্রায় গিয়ে বারংবার চুক্তি-শিক্ষকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। দ্বারভাঙা, মধুবনি, সমস্তিপুর-সহ বিভিন্ন জেলায় জুতো, চেয়ার এবং ইট-পাটকেল ছুড়ে প্রতিবাদ জানায় এই শিক্ষকরা। এরপরেও নীতীশ সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষকদের দাবি না মানায় এই বিক্ষোভ। |
|
|
|
|
|