প্রধানমন্ত্রী হবেন কি, বিনয়ী জবাব কৌশলী রাহুলের
রেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে সম্প্রতি তিন দিন ধরে সর্বভারতীয় রাজনীতির নজর কেড়েছে বিজেপি। কিন্তু আজ মোদীকে সহজে জমি না ছেড়ে কৌশলে নিজেকে আলোচনার কেন্দ্রে তুলে আনলেন রাহুল গাঁধী। সংসদ চত্বরে আলোচনায় বিনয়ের সঙ্গেই রাহুল আজ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর পদ আমার অগ্রাধিকার নয়। পরিবারের দু’জনকে এই পদে দেখেছি। তাই ক্ষমতার লিপ্সা আমার নেই। বরং মানুষের ক্ষমতায়নই আমার লক্ষ্য।”
কংগ্রেসের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতার মুখে ক্ষমতা ও প্রধানমন্ত্রীর পদ প্রসঙ্গে এ হেন মন্তব্য নতুন নয়। অনেকেই মনে করছেন, সময়টা প্রাসঙ্গিক। বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দিতে রবিবার পর্যন্ত দিল্লিতে ছিলেন মোদী। কর্মসমিতির বৈঠকের মঞ্চ মোদীকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে মোদী যখন আগ্রাসন দেখিয়েছেন, তখন ক্ষমতার প্রশ্নে বিনয় দেখালেন কৌশলী রাহুল। বিজেপি নেতারাও মনে করছেন রাহুলের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট সুপরিকল্পিত। না হলে যে রাহুল গাঁধী সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের যথাসম্ভব প্রশ্ন এড়িয়ে চলেন, তিনিই কিনা আজ সংসদের সেন্ট্রাল হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে দিব্যি আড্ডা দিলেন! তা-ও প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে! এবং তার মধ্যে দিয়ে নিজের রাজনৈতিক ভাবনাকে তুলে ধরতে চাইলেন জাতীয় স্তরে।
আর এ সবের মধ্যে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেল। আগামী লোকসভা ভোটে মূল যুদ্ধটা হবে নরেন্দ্র মোদী বনাম রাহুল গাঁধীর। কেন না মোদীকে ঠেকাতে বিজেপির শীর্ষ স্তরের একাংশ সক্রিয় হলেও দলের নেতারা বুঝতে পারছেন, দলের নিচু তলার কর্মী-সমর্থকদের মোদী-আবেগ মানা ছাড়া গতি নেই। বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে রাহুলের নাম ঘোষণা না করলেও তাঁকে দলের সহ-সভাপতি পদের দায়িত্ব দিয়ে এক প্রকার সেই মর্যাদাই দিয়েছে কংগ্রেসও। রাহুল কিন্তু আজ বলেননি যে প্রধানমন্ত্রী হবেন না। বরং বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী হতে চাই কি না, এই প্রশ্নটাই ভুল।” আর কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভি বলেন, “সনিয়া গাঁধী ও কংগ্রেস নেতৃত্বের রাজনৈতিক বলিদান সুবিদিত। রাহুলও সেই শিক্ষা পেয়েছেন। তবে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের আবেগকে স্বীকৃতি দিয়ে ভবিষ্যতে নিশ্চয় বড় দায়িত্ব নেবেন।”
কংগ্রেস সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীর পদ তাঁর অগ্রাধিকার নয় বলে মন্তব্য করলেও ২০১৪-র লড়াইয়ের জন্য রাহুল কিন্তু তলে তলে রাজনৈতিক দৌত্যে নেমে পড়েছেন। ইউপিএ-র শরিক দলের নেতা শরদ পওয়ার, কানিমোজি, লালুপ্রসাদ যাদব, রামবিলাস পাসোয়ানের মতো শরিক নেতাদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেছেন তিনি। কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি, সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন রাহুল।
তবে এ সব নিয়ে মুখ না খুলে রাহুল আজ খোলামেলা আড্ডায় কংগ্রেসের সাংগঠনিক সংস্কারের প্রশ্নে তাঁর পরিকল্পনা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, মুষ্টিমেয় কিছু নেতার হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত না করে বিকেন্দ্রিকরণই তাঁর লক্ষ্য। রাহুল এটাও স্বীকার করেন যে, ইন্দিরা গাঁধীর জমানা থেকে কংগ্রেসের হাইকম্যান্ড সংস্কৃতি শুরু হয়।
আড্ডায় উঠেছে রাহুলের বিয়ে-প্রসঙ্গও। বিয়ে নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা জানতে চাইলে রাহুল হেসে জবাব দেন, “আমি যদি বিয়ে করি ও আমার সন্তান হয়, তা হলে দলের জন্য চিন্তা করতে পারব না। তখন ভাবব যে, সন্তান যেন আমার জায়গাটা পায়। তাই বিয়ে করার ইচ্ছা নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.