|
|
|
|
মমতাকে শ্বেতপত্রে বিঁধতে তৈরি অধীর |
অনমিত্র সেনগুপ্ত • নয়াদিল্লি |
সব ঠিক থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় পশ্চিমবঙ্গের জন্য ঘোষিত রেল প্রকল্পগুলির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে পরশু, বৃহস্পতিবার সংসদে শ্বেতপত্র আনতে চলেছেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী।
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা পশ্চিমবঙ্গে এক ডজনের বেশি রেল কারখানা গড়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এখন রেলই সেগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান। অভিযোগ, প্রকল্পগুলি নির্মাণের দৃষ্টিভঙ্গিতে গলদ রয়েছে। উপরন্তু গত ছ’মাস ধরে রাজ্যে বিভিন্ন রেল প্রকল্প রূপায়ণে তৃণমূল সরকার বাধা দিয়ে এসেছে। বরাদ্দ অর্থ ফেরত এসেছে। অথচ সেই তৃণমূলই এখন বাজেটে রাজ্যের সঙ্গে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছে। নিজেদের ঘোষিত প্রকল্পে আত্মঘাতী পদক্ষেপ করে তৃণমূল কী ভাবে রাজ্যের উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে, শ্বেতপত্রে রাজ্যবাসীর কাছে তা তুলে ধরতে চান অধীর।
সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রে ফুরফুরা শরিফ কিংবা মেট্রোর নতুন লাইন পাততে তৃণমূল সরকারের নেতিবাচক ভূমিকার কথা শ্বেতপত্রে বলা হবে। রাজ্যের মেট্রো প্রকল্পগুলিতে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও জমি অধিগ্রহণের জটিলতায় চলতি বছরে খরচ হয়েছে মাত্র ৬৬০ কোটি। ফলে রেল বাজেটে কেন মেট্রোর জন্য সাতশো কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে, তা শ্বেতপত্রে ব্যাখ্যা করবেন অধীর।
এর পাশাপাশি, বাংলার ১৬টি বড় রেল প্রকল্পের বতর্মান অবস্থাও তুলে ধরা হচ্ছে। শ্বেতপত্রে অভিযোগ করা হয়েছে, কোনও একটি কারখানা গড়ার প্রয়োজনীয়তা, টাকার সংস্থান, এ সব বিচার না করে তৃণমূল নেত্রী স্রেফ সস্তা ফায়দা নিতে একের পর এক ঘোষণা করে গিয়েছিলেন। এবং ওই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে রাজ্যে কর্মসংস্থান তৈরির যে দাবি মমতা করেছিলেন, তা-ও ‘ভিত্তিহীন’।
উদাহরণস্বরূপ বলা হয়েছে, হলদিয়ায় ডিএমইউ কারখানা গড়ার ঘোষণা করেছিলেন মমতা। আড়াইশো কোটির প্রকল্পে মমতা জমানাতেই এখনও পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। যাতে শুধু একটি ছাউনি তৈরি হয়েছে। প্রকল্পটিকে ডিএমইউ কারখানা বলা হলেও আদতে এখানে স্রেফ কোচের আসন, আলো-পাখা লাগানোর কাজ হবে। তা-ও হবে বছরে মাত্র আটটি ট্রেনের, যাদের মূল কাঠামো মূলত তৈরি হবে চেন্নাইয়ে। শুধু চূড়ান্ত কাজটুকু সারতে ৮০০ কিলোমিটার উজিয়ে আসতে হবে ট্রেনগুলিকে। ফলে বাড়বে উৎপাদন খরচ। রেলের দাবি, বিশেষ প্রশিক্ষণ ছাড়া ওই কারখানায় কাজই করা যাবে না। ফলে স্থানীয় কর্মসংস্থানের গুড়ে বালি। ডানকুনি বা বজবজের কারখানাগুলির ক্ষেত্রেও একই ভাবে বাস্তব চিন্তাধারার চূড়ান্ত অভাব রয়েছে বলে জানাচ্ছে শ্বেতপত্র।
এই শ্বেতপত্র পেশে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব। এর আগে লালু প্রসাদের বিরুদ্ধে শ্বেতপত্র এনেছিলেন মমতা। এ বারও সেই পরম্পরা ফিরে আসার ইঙ্গিত। তবে কংগ্রেস নেতৃত্বের যুক্তি, তৃণমূল এখন আর শরিক নয়। ফলে জনতাকে জানানো দরকার, বিধানসভা ভোটে ফায়দা তুলতে কী ভাবে তারা রেল মন্ত্রককে ব্যবহার করেছিল। |
|
|
|
|
|