রাজ্য সরকার জনগণের মঙ্গল ও উন্নয়নের পক্ষে, না বিপক্ষে, জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত একটি মামলায় রাজ্যের গা-ছাড়া মনোভাব দেখে মঙ্গলবার শুনানির সময় এই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র।
এর আগে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের সেন্ট্রাল স্টেশনের জন্য বৌবাজার ষ্ট্রিটে রাজ্য সরকার যে জমি অধিগ্রহণ করেছিল, হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ তা খারিজ করে দেয়। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আপিল মামলা করেছিল তৃণমূল সরকার। কিন্তু হাইকোর্ট মনে করছে, রাজ্য আপিল মামলা করলেও তাতে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। সোমবার মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে সরকার পক্ষের কোনও আইনজীবী দাঁড়াননি। মঙ্গলবার সরকার পক্ষের আইনজীবী শাক্য সেন জানান, সরকার এই মামলা চালাবে, না প্রত্যাহার করবে, তা তিনি এখনও জানেন না। তিন দিন পরে সরকারের মত তিনি হাইকোর্টকে জানাতে পারবেন। এই বক্তব্যেই ক্ষুব্ধ হয় প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, সরকার ইচ্ছে করলেই আপিল মামলা প্রত্যাহার করতে পারে না। আর সরকার মামলা প্রত্যাহার করতে চাইলেও জনস্বার্থের কথা ভেবে হাইকোর্ট এই মামলা চালিয়ে যেতে পারে।
ওই প্রকল্পের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার সল্টলেকের দত্তাবাদে ওই প্রকল্পের সমীক্ষা করতে গেলে তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বাধায় প্রশাসনিক কর্তাদের ফিরতে হয়।
কেন সরকারের এমন মনোভাব? সরকারি সূত্র বলছে, আপিল মামলার শুনানি শুরুর আগেই দিল্লিতে রাজনৈতিক শক্তির বদল হয়। ইউপিএ ছেড়ে তৃণমূল বেরিয়ে আসে। মুকুল রায়ের বদলে রেলমন্ত্রী হন কংগ্রেসের পবন বনশল। এর পরেই দেখা যায়, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সম্পর্কে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে তৃণমূল।
এ দিন নির্দেশে অবশ্য ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, যেখানে জনগণের স্বার্থ যুক্ত, সরকারের থাকা উচিত সেখানেই। জনস্বার্থের বিপক্ষে যাওয়া উচিত নয়। |