বাংলাদেশের অশান্ত। অবনতি হচ্ছে পেট্রাপোল ও ঘোজাডাঙার সীমান্ত বাণিজ্যের।
গত দু’দিন জামাতের ডাকা বাংলাদেশ বন্ধের দিন মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল পেট্রাপোল সীমান্ত বন্দর। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ডাকা বন্ধের দিন পণ্য আমদানি কমল উল্লেখযোগ্য ভাবে। বন্দর সূত্রে খবর, প্রতিদিন প্রায় ১৮০ থেকে ১৯০টি পণ্যভর্তি ট্রাক বাংলাদেশের বেনাপোল থেকে পেট্রাপোলে প্রবেশ করে। মঙ্গলবার এসেছে মাত্র ২২টি ট্রাক। তবে মোটের উপর স্বাভাবিক ছিল পণ্য রফতানি। পণ্যভর্তি প্রায় ৩৫৫টি ট্রাক পেট্রাপোল থেকে বেনাপোলে ঢুকেছে। কিন্তু তাতে অবশ্য এ দিনের সীমান্ত বাণিজ্যের তেমন কোনও হেরফের হয়নি। কারণ মূলত পণ্য আমদানি হলেই কেন্দ্রের রাজস্ব বাড়ে।
শুল্ক দফতরের সহকারি কমিশনার শুভেন দাশগুপ্ত বলেন, “মঙ্গলবার পণ্য আমদানি কম হওয়ার জন্য রাজস্বের ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা।” বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট-সহ বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলি থেকে পণ্য ভর্তি ট্রাক বেনাপোলে আসতে পারছে না। আবার এদেশ থেকে পণ্যভর্তি ট্রাক বেনাপোলে ঢুকলেও অনেকসময়ই তার বাইরে যেতে পারছে না। |
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ দেশ থেকে পণ্যভর্তি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে ঢুকলেও সেখানে পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না। এ ভাবে চলতে থাকলে বাণিজ্য পুরো বন্ধ হয়ে যাবে।” বেনাপোলের এক ক্লিয়ারিং এজেন্ট জানালেন, “স্বাভাবিক সময়ে বেনাপোল থেকে ঢাকা পর্যন্ত ট্রাকভাড়া হল ২০ হাজার টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। তবু চালক পাওয়া যাচ্ছে না।”
শুধু পণ্য পরিবহনে নয়, প্রভাব পড়েছে যাত্রী পরিবহনেও। গড়ে প্রতিদিন পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সোমবার যাতায়াত করেছেন ২৯৯ জন। মঙ্গলবার বেলা ১ টা পর্যম্ত যাতায়াত করেছেন ২৫০ জন। বন্দরের কাছাকাছি রয়েছে ২০০টির মত মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র। বেশিরভাগই বন্ধ। একটি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রের ম্যানেজার আশিস দে বললেন, “প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার ইউএস ডলারের মত কেনাবেচা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার মাত্র ২০০ ডলার কেনাবেচা হয়েছে।” বেসরকারি পরিবহণ বন্ধ থাকায় বন্ধ হোটেল, খাবারের দোকান। একই চিত্র বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তের। ১০ চাকার ট্রাক পণ্য নিয়ে সরাসরি ঘোজাডাঙা থেকে বাংলাদেশের ভোমরায় ঢুকতে পারবে না--এই দাবিতে আন্দোলনের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল ঘোজাডাঙার সীমান্ত বাণিজ্য। সোমবার অচলাবস্থা কেটেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক অশান্তির জেরে মঙ্গলবার ঘোজাডাঙায় বাণিজ্যের কাজ প্রায় হয়নি। দু’দেশের মধ্যে মানুষের যাতাযাতও কমে গিয়েছে অনেকটাই। |