রোগের প্রকোপে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে লঙ্কা গাছ, এমনই দাবি করছেন কালনার লঙ্কা চাষিরা। কুটে রোগের সংক্রমণে অন্য বারের তুলনায় এ বার ফলনও খানিকটা কমছে বলে তাঁদের দাবি। লঙ্কা গাছে ভাইরাস সংক্রমণের কথা স্বীকার করেছে মহকুমা কৃষি দফতর। রোগ যাতে পুরো ছড়াতে না পারে, সে জন্য চাষিদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলছেন কৃষিকর্তারা।
ফি বছর শীতে প্রায় তিন হাজার বিঘা জমিতে লঙ্কা চাষ হয় কালনায়। যুক্ত থাকেন প্রায় পাঁচ হাজার চাষি। তাঁদের দাবি, এ বার ফলন অনেকটা কম। কারণ, কুটে রোগের প্রকোপ। সে জন্য অন্য বারের তুলনায় প্রায় এক তৃতীয়াংশেরও বেশি ফলন কমেছে বলে দাবি চাষিদের।
কালনা ১ ব্লকের হাতিপোতা, মির্জাপুর, পারদুপসা, রামেশ্বরপুর, নতুনগ্রাম, ঘুঘুডাঙা, কালীনগর, কালেক্টরি চর, মালতীপুর, ভবানীপুর, বেলকুলি, নাগরগাছির ইত্যাদি বহু গ্রামেই শীতকালে লঙ্কা চাষ হয়। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে কাঁচা লঙ্কা উঠতে আরম্ভ করে। চাষিরা সেই লঙ্কা ধাত্রীগ্রাম, নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি-সহ কয়েক জায়গায় আড়তদারদের বিক্রি করে। এর পরে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আড়তদারদের থেকে লঙ্কা কিনে বাজারে নিয়ে যায়।
লঙ্কা চাষি মোর্শেদ শেখ, দায়মল শেখ, সামসুল মণ্ডলদের দাবি, “বিঘা প্রতি জমিতে স্বাভাবিক ভাবে ১৪-১৫ কুইন্টাল লঙ্কা হয়। এ বার তা মেরেকেটে দাঁড়াচ্ছে চার কুইন্টাল।” কালনা ১ ব্লকে সব থেকে বেশি লঙ্কা চাষ হয় নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকায়। এই পঞ্চায়েতের প্রধান ঈদের আলি মোল্লাও বলেন, “এ বার লঙ্কার ফলন কমেছে।” চাষিরা জানান, চাষের মাঝপথে কুটে রোগে গাছের বৃদ্ধি থেমে গিয়েছে। এই রোগে পাতায় ছোপ দাগ দেখা যায়। গাছের ডগার অংশ হলদে হয়ে কুঁকড়ে যেতে থাকে। পরে গোটা গাছই ঝিমিয়ে পড়তে থাকে। রোগ হসে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম লঙ্কা হয়। যে বছর এই রোগ দেখা দেয়, সে বার লঙ্কার আকারও ছোট হয়ে যায়।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, লঙ্কা খেতে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে এই রোগ ছড়ায়। তবে রোগগ্রস্ত গাছকে গোড়াতেই মাটি থেকে তুলে ফেললে নিস্তার মিলতে পারে। কালনা মহকুমা সহ-কৃষি আধিকারিক নিলয় কর বলেন, “অনেকে এই ধরনের রোগকে ‘সাহেব রোগ’ও বলেন। সংক্রমণে সব থেকে ক্ষতি হয় গাছের ডগার অংশে। রোগ বেশি ছড়িয়ে পড়লে ফলন কমে যায়।” চাষিদের জন্য তাঁর পরামর্শ, জমিতে রোগগ্রস্ত গাছ দেখলেই তুলে পুড়িয়ে ফেলা উচিত। |