পানাগড় থেকে সিলামপুর
নিকাশির ব্যবস্থা হয়নি, রাস্তার কাজ বন্ধ বাসিন্দাদের ক্ষোভে
ঠিকা সংস্থার বিরুদ্ধে ঠিক মতো কাজ না করার অভিযোগ তুলে রাস্তা সারানোয় বাধা দিয়েছিলেন কিছু বাসিন্দা। কাজ না করে চলে গিয়েছে সংস্থাটি। এর ফলে দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে পানাগড়-সিলামপুর রাস্তা। মহকুমাশাসক আয়েষা রানির আশ্বাস, শীঘ্র এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পানাগড় বাজার থেকে সিলামপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। কাঁকসা ও গলসি ১ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে রাস্তাটি ব্যবহার করেন। এক দিকে রণডিহা, সিলামপুর, ভরতপুর ইত্যাদি গ্রামে রয়েছে হাইস্কুল, ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন সরকারি অফিস। অন্য দিকে পানাগড়ে আছে ব্লক অফিস, থানা, দমকল দফতর, স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, হাসপাতাল। এলাকার সবচেয়ে বড় বাজারও পানাগড়ে। ফলে নানা প্রয়োজনে দু’দিকের মানুষজনকেই এই রাস্তাটি ব্যবহার করতে হয়।
কয়েক মাস আগে এই রাস্তা সারানোর কাজ শুরু হয়। পূর্ত দফতর কাজটি করার দায়িত্ব দিয়েছে এক ঠিকা সংস্থাকে। সংস্কারের পাশাপাশি রাস্তা চওড়া করার কাজের জন্যও বাজেট ধরা রয়েছে। সে জন্য রাস্তার পাশে খালও কেটেছে ঠিকা সংস্থাটি।
অসমাপ্ত সম্প্রসারণের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
কিন্তু এলাকার কিছু বাসিন্দার অভিযোগ, সরকারি নিয়ম মেনে কাজ করা হচ্ছে না। তাঁদের দাবি, পানাগড় রেল ক্রসিং থেকে স্থানীয় অগ্রগামী ক্লাব পর্যন্ত অংশে যানজট সব চেয়ে বেশি। এই অংশে রাস্তার পূর্ব দিকে নিকাশি ব্যবস্থা থাকলেও পশ্চিমে তা নেই। বাড়ির পিছনে জল গিয়ে জমে। মশা-মাছির উপদ্রবে জেরবার হন বাসিন্দারা। বৃষ্টি হলে সে দিকের জল রাস্তার উপর দিক দিয়ে গিয়ে পূর্ব দিকের নর্দমায় পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে রাস্তার ক্ষতি হবে। তাই পশ্চিম দিকে স্থায়ী নিকাশি ব্যবস্থা না তৈরি হলে রাস্তা টেকসই হবে না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
ওই এলাকার বাসিন্দা প্রকাশচন্দ্র পালের দাবি, “ডিভিসি সেতু থেকে সিলামপুর পর্যন্ত রাস্তায় নিকাশি ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই। কারণ দু’দিকে চাষের জমি রয়েছে। কিন্তু পানাগড় বাজার থেকে রেল ক্রসিং পর্যন্ত দু’দিকে ঘনবসতি। কাজেই নিকাশি ব্যবস্থার একান্ত প্রয়োজন।” সঞ্জয় আচার্য, রাজেশ সাউ, রাম প্রসাদদের আবার অভিযোগ, “রাস্তাটির ব্যস্ততম অংশে উপযুক্ত সম্প্রসারণের কাজ করছিল না ঠিকা সংস্থাটি। সেই জন্যই আমরা আপত্তি জানিয়েছি।”
রাস্তার কাজ নিয়ম মেনে হচ্ছে না, সেই অভিযোগ কাঁকসার বিডিও-কে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন এলাকার কিছু বাসিন্দা। ঠিকা সংস্থার লোকজনকে কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের বক্তব্য, যে ভাবে কাজ হচ্ছিল তাতে শুধু সরকারি অর্থের অপচয়ই হচ্ছিল।
বাসিন্দারা বাধা দেওয়ায় ঠিকা সংস্থাটি কাজ বন্ধ রেখেছে। সম্প্রসারণের জন্য রাস্তার দু’পাশে খোঁড়াখুড়ি করা হয়েছিল। এখন সেই অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে রাস্তা। যে সব অংশে প্রাথমিক ভাবে কাজ হয়েছিল, সেখানে পাথর বেরিয়ে এবড়ো-খেবড়ো হয়ে গিয়েছে পথ। ফলে বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিপাকে পড়ছেন নিত্যযাত্রীরাও।
এমনই কয়েক জন নিত্যযাত্রী মুকেশ সাউ, সুনীতা বসুরা জানান, আগের থেকে গাড়ি চলাচল বেড়েছে। ফলে নিত্য যানজট হত। রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল পড়েছিল। সম্প্রসারণের কাজ শুরু হওয়ায় তাঁরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। তাঁরা বলেন, “কয়েক মাস ধরে কাজ বন্ধ। আমরা চাই, সরকারি নিয়ম মেনে যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করা হোক।”
ওই ঠিকা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক আয়েষা রানি জানান, পূর্ত দফতরের কাছে খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি দ্রুত কাজ শুরুর ব্যবস্থা করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.