মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষায় মালদহের একাধিক স্কুলে গণটোকাটুকির অভিযোগ উঠেছে। নকল রুখতে পুলিশকে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়েছে। সোমবার পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘন্টা পার হতে না হতেই ইংরেজবাজার থানার দামোদরপুরের সান্তা দৈব্যা হাইস্কুলের বাইরে শতাধিক বহিরাগতরা বাইরে থেকে নকল ছুঁড়তে থাকে। পাঁচিল টপকে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে দেদার নকল সরবরাহ করে বহিরাগতরা। শুধুমাত্র একটি স্কুলেই নয়, অমৃতির রায়গ্রাম হাইস্কুল, মোহনপুর নিবেদিতা হাইস্কুল, ভর্তিটারি হাইস্কুলে ছিল একই চিত্র । ইংরেজবাজার থানার আইসি বলেন, “মালদহ শহরে ১১ টি কেন্দ্রে ও গ্রামে ৬ কেন্দ্রে পরীক্ষা হচ্ছে। মোট ১৭ টি কেন্দ্রে পাহার দেওয়ার মতো পযার্প্ত পুলিশ নেই। তবে যেখানেই নকল করার খবর আসছে সেখানে পুলিশ গিয়ে তাড়া করে বহিরাগতদের তাড়িয়ে দিচ্ছে।”
এ দিকে কোচবিহারের শীতলখুচির গোপীনাথ হাইস্কুলে নিজেই নিজের অঙ্ক পরীক্ষার খাতা টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলেছে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও আধিকারিকরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদে খবর দেয়। পরীক্ষার্থীর অভিভাবককেও খবর দিয়ে স্কুলে আনা হয়। পরে ওই পরীক্ষার্থী পরীক্ষা ভাল না হওয়ায় নিজেই উত্তর পত্র ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করেছেন বলে লিখিত মুচলেকা দিয়ে রেহাই পায়। পর্ষদের নির্দেশে টুকরো টুকরো খাতাটি সিল করে শিলিগুড়ি পাঠানো হয়।
স্কুল সূত্রের খবর ওই পরীক্ষার্থীর নাম শাহজাহান বাদশা। গোঁসাইয়েরহাট স্কুলের ওই ছাত্র এবার নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসাবে মাধ্যমিকে বসে। এ দিন পরীক্ষা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ওই ছাত্র নিজেই নিজের উত্তরপত্র টুকরো করে মাটিতে ছড়িয়ে দেয়। শীতলখুচির এআই সেকেন্ডারি তথা মাধ্যমিকের শীতলখুচি ব্লকের অফিসার ইনচার্জ অবিনাশ বর্মন বলেন “পর্ষদের নির্দেশ মেনে ওই পরীক্ষার্থীর টুকরো খাতা সিল প্যাকেট করে পর্ষদের দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা ভাল না হওয়ায় সে রাগের মাথায় ওই কাজ করেছে বলে লিখিত দিয়েছে। তাঁর অভিভাবকও দুঃখপ্রকাশ করেন।” মাধ্যমিকের মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কোচবিহার জেলা মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “ছাত্রটি নিজের ভুল স্বীকার না করলে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে পুলিশে এফআইআর করতে হত।” এ বিষয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এ বিষয়ে পর্ষদে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” দিনহাটার বুড়িরহাট প্রাণেশ্বর হাইস্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের ঘরে চেয়ার টেবিল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এদিন পরীক্ষা শুরুর আগে একটি হলঘর খোলার পর একাধিক বেঞ্চ ও টেবিল ভাঙচুর করার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তড়িঘড়ি বিকল্প বেঞ্চের ব্যবস্থা করে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, “নজরদারিতে কড়াকড়ির ক্ষোভেই জানালার পাল্লা ভেঙে ঢুকে দুস্কৃতীরা ওই কাজ করেছে বলে মনে হচ্ছে। জেলাশাসকের সঙ্গে ওই ব্যাপারে কথা হয়েছে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
অপররদিকে, ইসলামপুরে মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষার দিন উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে পরীক্ষা হয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবেই। যথেষ্ট পরিমাণ পুলিশ মতায়েন থাকায় মাধ্যমিক পরীক্ষাতে নকল সরবরাহের কাজে দেখা যায়নি কাউকে। ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবেই পরীক্ষা হয়েছে। গ্রেফতারের খবর নেই।”
পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে ইসলামপুরে নকল সরবরাহ রুখতে জনতার ছোঁড়া ঢিল লাগে ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পালের হাতে। শুক্রবার গোয়ালপোখরের ঠিকরিবাড়ি স্কুলে নকল সরবরাহে বাঁধা দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে জনতার কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়।
ব্যাগ নিল দুষ্কৃতীরা। ভরদুপুরে চা শ্রমিকদের বেতনের ২ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা ভরা ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার মালবাজার দৈনিক বাজার সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ দিন বেতগুড়ি চা বাগানের কর্মী রঘুবীর কতোয়াল ব্যাঙ্ক থেকে শ্রমিকদের বেতনের টাকা তুলে ব্যাগে করে বাজারে কেনাকাটা করতে যান। ওই সময় একটি পান দোকানের সামনে কিছুক্ষণের জন্য ব্যাগটি নামিয়ে পাশে রাখলে মূহুর্তে দুষ্কৃতীরা সেটা নিয়ে পালিয়ে যায়।
|