মাধ্যমিকে প্রায় প্রতিদিনের পরীক্ষাতেই গণটোকাটুকির খবর মিলছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। সংবাদপত্রে, টিভি চ্যানেলে নকল জোগানোর ছবিও দেখা গিয়েছে। কিন্তু মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক টোকাটুকির কথা মানতে চাননি। সোমবার তাঁর পাশে দাঁড়ালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। জানালেন, রাজ্যের কোথাও গণটোকাটুকি হয়নি। যদিও মালদহ, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ বিভিন্ন জেলার বহু পরীক্ষা কেন্দ্রে এ দিনও গণটোকাটুকির খবর এসেছে।
কোথাও গাছে উঠে, কোথাও স্কুলের কার্নিশে দাঁড়িয়ে চলেছে নকল সরবরাহ। এবং এ-সব ঘটছে পুলিশের সামনেই। কিছু ক্ষেত্রে দোষীদের গ্রেফতার করা হলেও প্রশ্ন উঠেছে, গণটোকাটুকি এড়ানো গেল না কেন?
এ বার মাধ্যমিকের শুরু থেকেই চলছে টোকাটুকির হিড়িক। |
চলছে নকলের জোগান। সোমবার বনগাঁর একটি স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র |
সোমবার ছিল অঙ্ক পরীক্ষা। এ দিন মালদহের ইংরেজবাজার থানা এলাকার দামোদরপুরে শান্তা দৈব্যা হাইস্কুলের বাইরে শতাধিক লোক জড়ো হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে নকল ছুড়তে থাকে বলে অভিযোগ। পাঁচিল টপকে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকেও দেদার নকল সরবরাহ করে তারা। শুধু ওই স্কুলে নয়, অমৃতির রায়গ্রাম হাইস্কুল, মোহনপুর নিবেদিতা হাইস্কুল, ভর্তিটারি হাইস্কুলেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে। বনগাঁর বেশ কিছু স্কুলে পরীক্ষার্থীরা কাগজে প্রশ্ন লিখে তা তলায় ছুড়ে দিয়েছে এবং সেই প্রশ্নের উত্তর দিব্যি পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে পৌঁছে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
কী করছে পুলিশ?
ইংরেজবাজার থানার এক অফিসার বলেন, “পাহারা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত কর্মী নেই। তবে যেখানেই নকল করার খবর আসছে, পুলিশ বহিরাগতদের তাড়িয়ে দিচ্ছে।”
শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য গণটোকাটুকির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। কোথাও তা করার চেষ্টা হলেই দোষীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে তাঁর দাবি। এ দিন কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানের পরে মন্ত্রী বলেন, “টোকাটুকি দীর্ঘদিনের ব্যাধি। একে নির্মূল করা হবেই। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁকে বলেছি জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে উচ্চ মাধ্যমিকে বাড়তি সতর্কতার ব্যবস্থা করতে হবে।” উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ১৩ মার্চ। টোকাটুকি রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান সংসদের সভাপতি মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায়ও।
টোকাটুকির সঙ্গে সঙ্গে এ দিন মাধ্যমিকে হিন্দি মাধ্যমের প্রশ্নপত্রে একটি অঙ্ক ভুল ছিল অভিযোগ উঠেছে। মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র পাঁচটি ভাষায় ছাপা হয়। পাঁচ নম্বরের একটি প্রশ্ন অন্যান্য মাধ্যমের প্রশ্নপত্রে
ঠিক ছাপা হলেও হিন্দিতে তা ভুল আছে বলে অভিযোগ। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এ কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “কেউ ঠিক পদ্ধতিতে অঙ্কটি করার চেষ্টা করলে পুরো নম্বর
দেওয়া হবে।”
|