অর্থ বরাদ্দের পাঁচ বছর পরেও মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দুটি ব্লকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) ১৩টি নতুন প্রকল্প চালু না হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পানীয় জল সরবরাহের জন্য ২০০৮ সালে ১৩টি মৌজায় প্রকল্পগুলি তৈরির জন্য ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। বলা হয়েছিল দ্রুত শেষ করে জল সরবরাহ শুরু হবে। প্রকল্পগুলি চালু করা দূরের কথা সেগুলি তৈরির কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি পিএইচই দফতর। দফতরের গাফিলতির পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে প্রকল্পগুলি তৈরির কাজ ব্যহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
যদিও চাঁচল মহকুমা পিএইচই দফতরের সহকারী বাস্তুকার গৌতম দত্ত বলেন, নানা সমস্যায় প্রকল্পগুলির কাজ কিছুটা ব্যহত হলেও অধিকাংশ কাজ শেষ হওয়ার মুখে। আশা করছি দ্রুত সেগুলি চালু করে দেওয়া সম্ভব হবে।” হরিশ্চন্দ্রপুর-১ এবং হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নম্বর ব্লকের যে সমস্ত মৌজায় প্রকল্পগুলি হচ্ছে তার অধিকাংশই ডায়েরিয়াপ্রবণ বলে পরিচিত। ওই এলাকাগুলির বাসিন্দাদের ভরসা অগভীর নলকূপ। ওই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক। একাধিকবার বিধানসভাতেও সরব হন তিনি। এর পরে ২০০৮ সালে ১৩টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ মেলে। প্রকল্পগুলি হলে উপকৃত হবেন প্রতিটি মৌজার অন্তর্ভূক্ত ১০০টির বেশি গ্রামের মানুষ।
পিএইচই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন প্রকল্পগুলি হচ্ছে মিলনগড়, কোনার, তালসুর, মিহাহাট, দৌলতনগর, তালবাংরুয়া, দক্ষিণ গৌরীপুর, অর্জুনা, ডহরা, আলিনগর, মহেন্দ্রপুর, মালিপাকড় ও ভৈরবপুর মৌজা এলাকায়। কিন্তু প্রকল্পগুলি তৈরি করতে গিয়ে অন্যান্য সরকারি দফতরের মুখাপেক্ষী হওয়ায় কাজে সমস্যা দেখা দেয়। কোথাও বাঁধের উপর দিয়ে পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার জন্য সেচ দফতরের কাছ থেকে আবার কোথাও জাতীয় সড়ক পার করে পাইপলাইন নিতে অনুমতি নিতে হয়েছে। ফলে সময় নষ্ট হয়ে প্রকল্প তৈরির কাজ ব্যহত হয়েছে। এছাড়াও কলকাতা থেকে প্রকল্পের সরঞ্জাম সময় মতো এসে না পৌঁছনোর ফলেও প্রকল্প তৈরির গতি থমকে যায়। তবে আপাতত অধিকাংশ প্রকল্পের ভবন তৈরি সহ নলকূপ বসানোর কাজ শেষ হলেও কয়েকটি প্রকল্পে জল সংরক্ষণের জন্য রিজার্ভার তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি। যদিও পিএইচই কর্তারা জানান, রিজার্ভার তৈরি না হলেও সেখানে পাম্প চালু করে প্রাথমিকভাবে পাম্প থেকে সরাসরি জল সরবরাহ করা হবে। হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তজমূল হোসেন বলেন, “প্রকল্পগুলি দ্রুত চালু করার জন্য দফতরের মন্ত্রীর কাছে আবেদন রেখেছি। বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে অযথা আর যাতে দেরি না হয় সেটাও দেখতে বলেছি।” |