জলস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) প্রধান জলের লাইনের পাইপ ফেটে গত দুদিন ধরে নির্জলা বালুরঘাটের ৬টি ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত বৃহস্পতিবার সকালে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে পিএইচইর পাম্প হাউসে ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফে মেরামতির উদ্যোগ নিতে দুদিন কেটে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলারেরা ক্ষুব্ধ। পুরসভা এবং পিএইচই-র মধ্যে টানাপোড়েনের জেরে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। শুক্রবার পিএইচইর দক্ষিণ দিনাজপুরের নির্বাহী বাস্তুকার প্রজেত সমাজদার বলেন, “দ্রুত গতিতে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”
কিন্তু এদিন বিকালে ৪টা পর পাম্প হাউসে গিয়ে দেখা যায় মেরামতির কাজ শেষ না করেই কর্মীরা চলে গিয়েছেন। এবিষয়ে নির্বাহী বাস্তুকার প্রজেতবাবু বলেন, “কয়েকদিন আগে থেকেই পাম্প হাউসের পাইপে সমস্যা হয়েছে। পুরসভার একটা দায়িত্ব রয়েছে। অথচ আমাদের কোনও খবর দেওয়া হয়নি।” আরএসপি পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারপার্সন সুচেতা বিশ্বাস বিষয়টি পিএইচইর দিকেই ঠেলে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “শহরে পানীয় জল সরবরাহের দায়িত্ব পিএইচই-র। জল সরবরাহের দায়িত্ব পুরসভাকে হস্তান্তর হয়নি। সমস্যার কথা কাউন্সিলররা পিএইচইকে জানিয়েছিল।” বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়ে জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “পিএইচইর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”
বালুরঘাট শহরের ২৩ টি ওয়ার্ডের মধ্যে জল সঙ্কটে চলছে ১৫, ১৯, ২০, ২১, ২২ এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে। পাইপ লাইন দিয়ে ট্যাপের মাধ্যমে তিন বেলা পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুপ্তা বর্মন, ২১ নম্বরের কাউন্সিলর প্রলয় ঘোষ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অলোক সরকারেরা বলেন, “বিষয়টি পুরসভা এবং পিএইচই-কে জানানো হয়েছে। কিন্তু কারিগরি প্রযুক্তি পুরসভার হাতে না থাকায় সমস্যা হচ্ছে।”
জল সঙ্কটে পড়া ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, “শহরে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পে ২০০৯-১০ আর্থিক বছরে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে বালুরঘাট পুরসভা ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ পেলেও কাজ শুরু করতে পারেনি। আমরা পুরসভার অভিযান করব।” ভুক্তভোগী ওয়ার্ডের বাসিন্দা শম্পি দাস, পপি বর্মন, পূজা মোহন্তরা জানান, কয়েকদিন ধরে ট্যাপে জলের আস্তে আস্তে পড়ছিল। গত দুদিন ধরে সম্পূর্ণ জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। জল কিনে খেতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। |