জরায়ুতে অস্ত্রোপচারের পরে ভিতর থেকে ‘সার্জিক্যাল টেপ’ বার না করেই সেলাই করে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। ফলে গোটা শরীরে সংক্রমণ ছড়াচ্ছিল বছর পঞ্চাশের ডিম্পল বাওয়ারের। অন্য চিকিৎসকের কাছে গিয়ে আবার অস্ত্রোপচার করেও ফল মেলেনি। শেষে ডিম্পলদেবীর বাড়ির লোকেরা তাঁকে আর এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। তিনি আরও এক দফা অস্ত্রোপচার করেন। পাঁচ মাসে মোট তিন বার অস্ত্রোপচারের পরে জানা যায়, প্রথম বার অস্ত্রোপচারের সময়েই জরায়ুর মধ্যে ‘সার্জিক্যাল টেপ’টি থেকে গিয়েছিল!
যে স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ প্রথমে অস্ত্রোপচার করেছিলেন সেই মৃদুলা ভোরা এবং পরে যাঁর কাছে ডিম্পলদেবীকে রেফার করেছিলেন সেই চিকিৎসক ম্যাথিউ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ডিম্পলদেবীর বাড়ির লোকেরা। অভিযোগ জানানো হয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছেও। ডিম্পলদেবীর স্বামী সুরদেববাবু জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী এখন বিপন্মুক্ত। কিন্তু চিকিৎসকের গাফিলতিতে আর কারও যাতে এই অবস্থা না হয়, তাই ওই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা।
অভিযোগ, প্রথমে সিটি স্ক্যান ও পরে অস্ত্রোপচার করেও মৃদুলা ভোরা এবং ম্যাথিউ জন দুই চিকিৎসকই ডিম্পলদেবীর জরায়ুতে বাইরের কোনও জিনিসের অস্তিত্বের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। সুরদেববাবুর অভিযোগ, এর পরে এক্স-রে রিপোর্টেও জরায়ুতে বাইরের কোনও জিনিসের অস্তিত্বের স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলেও চিকিৎসক ম্যাথিউ জন তা উড়িয়ে দেন। সুরদেববাবু জানান, এর পর তিনি সমস্ত রিপোর্ট দিল্লিতে এক চিকিৎসকের কাছে পাঠান। রিপোর্ট দেখে তিনিও জরায়ুতে বাইরের কোনও জিনিসের অস্তিত্বের কথা বলেন। পরে অন্য দুই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ৫ অক্টোবর ডিম্পলদেবীর আরও এক বার অস্ত্রোপচার করে ভিতরে থেকে যাওয়া ‘সার্জিক্যাল টেপ’টি বার করা হয়।
অভিযুক্ত দুই চিকিৎসকই অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। চিকিৎসক মৃদুলা ভোরা বলেন, “ওই মহিলা এখন স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করছেন। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ।” চিকিৎসক ম্যাথিউ জন অবশ্য বলেছেন, “যা বলার আদালতে বলব।” |