স্বাস্থ্য-শিবিরে পুলিশ-কর্মীরা
ওঁদের দেখলে চোর-ডাকাতরা কাঁপে। ওঁদের পিস্তল কিংবা রাইফেল হাতে ঘোরাঘুরি করতে দেখলে সম্ভ্রমে অনেকেই রাস্তা ছেড়ে দেন। রাতে যাতে শহরবাসী নির্বিঘ্নে ঘুমোতে পারেন তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও ওঁদেরই। যাঁরা এমন গুরুদায়িত্ব পালন করে চলেছেন, তাঁদের শরীরের হাল কেমন? লাগাতার ধকলে কার শরীরে কী ধরনের রোগ বাসা বেঁধেছে? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর যেন মিলল শুক্রবার। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারের অফিস চত্বরে। যেখানে দিনভর রাজ্যের নামী বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করলেন পুলিশ অফিসার-কর্মীদের শরীর। দিনের শেষে ১৭৫ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বিশেষজ্ঞরা নানা রায় ও পরামর্শ দিলেন। মোটামুটি দেখা গেল, সিংহভাগই টেনশন জনিত নানা রোগে আক্রান্ত। তবে বিশিষ্ট হৃদ শল্য চিকিৎসক সত্যজিৎ বসু সকলকেই আশ্বাস দিয়ে বললেন, “চিন্তার কিছু নেই। মোটামুটি সকলেই ‘ফিট’। কিছু নিয়ম মেনে চলবেন। তাতে টেনশন কমানো যায়। দরকারে ওষুধ খেতে হবে।”
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে ‘জেনিংস’-এর যৌথ উদ্যোগে ওই স্বাস্থ্য শিবির হয়। তাতে সামিল হয় দূর্গাপুরের মিশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। গ্যাংটক ও কোচবিহারেও ওই ধরনের শিবির হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, সমস্ত পুলিশ কর্মচারীদের ওই ধরনের শিবিরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। আগে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ, সেল, ইস্টার্ন রেল সহ আরও বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এখই ধরনের কাজ করেছে সংস্থা দুটি। বাংলা ছাড়া সিকিম ও ঝাড়খন্ডের সঙ্গেও বিপিএল তালিকাভুক্তদের নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে তাঁরা কাজ করছেন বলে জানান মিশন হাসপাতালের সিনিয়র ম্যানেজার প্রীতিশ ঘোষ। এদিন ১২টা নাগাদ স্বাস্থ্যশিবির শুরু হয়। উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার। হাজির ছিলেন ডিসি (ট্রাফিক) জয়ন্ত পাল সহ প্রথম সারির পুলিশ কর্তারা। গোড়া থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে উপচে পড়ে ভিড়। সেখানেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাচ্ছিলেন এএসআই নরেশ শর্মা। ভক্তিনগর থানায় কর্মরত নরেশবাবুর বুকে ব্যথা হয়। উৎস জানতে তিনি বিশেষজ্ঞ পার্থ পালকে দেখান। পার্থবাবু তাঁকে ওষুধ লিখে দেন। পরামর্শ দেন চাপ মুক্ত থাকার জন্য।
স্যার, পুলিশের চাকরিতে চাপ ছাড়া একটা মুহূর্ত আছে নাকি? খানিকটা উষ্মার সঙ্গে এক সিনিয়র এসআই এ কথা জানালেন চিকিৎসকদের। ইতিমধ্যে ‘স্পাইন সার্জন’ অভিষেক রায়, কার্ডিওলজিস্ট অশোক পারিদারাও চাপ মুক্ত থাকার নানা উপায় বাতলে দিলেন। সেখানেই ছিলেন এসআই অভিজিৎ কার্জি। তিনি বললেন, “আমি দেখালাম। আমাকে দেখে বললেন, সব ঠিক আছে। কোনও ওষুধ দেননি। এতে নিজেকে আরও বেশি ফিট লাগছে।” ঘটনাচক্রে, ওই শিবিরে গিয়ে পুলিশকর্মীরা অনেকেই বুঝেছেন, চাপের কারণেই তাঁদের শরীর নানা সময়ে অবসন্ন ঠেকে। যেমন কমিশনারেটের এক অফিসার সপরিবারে গিয়েছিলেন শিবিরে। বাড়ির লোকজনের সন্দেহ, কর্তার শরীরে কোনও রোগ আছে। কিন্তু, প্রায় ১৫ মিনিট ধরে পরীক্ষার পরে চিকিৎসক বললেন, “আপনি পুরো ফিট । রোদে-জলে টানা ডিউটি করে মুখটা কেমন হয়ে গিয়েছে। দুশ্চিন্তার কিছু নেই। প্রয়োজনে পার্লারে গিয়ে ‘ফেসিয়াল’ করাবেন। দেখবেন আপনাকে আরও সুন্দর ও সপ্রতিভ লাগছে।”
ডাক্তারবাবুর কথায় হেসে মুখে ওড়না চাপা দিলেন ওই এসআইয়ের স্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.