শ্রম দফতরের হিসেব বলছে ২২টি চা বাগানে শ্রমিক ও তাঁর পরিবার মিলিয়ে বাস করছেন ১৮ হাজার জন। অথচ খাদ্য সরবরাহ দফতরের হিসেবে ওই সংখ্যা ৯১ হাজার। তা মেনেই বছরের পর বছর ধরে রেশন সরবরাহ করা হচ্ছে চা বাগানগুলিতে। এই তথ্য তুলে ধরে একাধিক বার মন্ত্রী উদ্বেগের কথা জানালেও সুরাহা হয়নি আজও। শুক্রবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক, খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিক এবং শ্রম দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সেখানে ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বৈঠক শেষে ফের ওই তথ্য তুলে ধরে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “শ্রম দফতরের হিসেবে শ্রমিক সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে প্রায় চার কোটি টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। খাদ্য সরবরাহ দফতরের হিসেবে যে অতিরিক্ত মানুষ দেখানো হয়েছে তাতে জানা দরকার বাকিরা কারা। সেদিকে লক্ষ্য রেখে তিন দফতর মিলে সমীক্ষা শুরু করা হবে। এর পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মন্ত্রী জানান, ২০০৪ সাল থেকে যে সব চা বাগান দফায় দফায় বন্ধ হয়েছে সেরকম ২২টি চা বাগানের শ্রমিক সংখ্যার হিসেবে বিস্তর ফারাক রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পরে প্রায় দু’বছর হয়ে গিয়েছে। এত দিনেও কেন সঠিক হিসেব বের করা সম্ভব হয়নি? |
শ্রমিকরা দাবি করেছেন, খাদ্য সরবরাহ দফতরের হিসেবে যদি গরমিল থাকে সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে চার কোটি টাকার খাবার কোথায় যাচ্ছে তা জানা দরকার। তদন্তের দাবি করেছেন তাঁরা।
মন্ত্রী জানান, খাদ্য সরবরাহ দফতর, শ্রম দফতর এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের চারজন করে প্রতিনিধি নিয়ে একটি দল গঠন করে ওই ২২টি চা বাগানে সমীক্ষার কাজ শুরু করা হবে। চলতি মাসে ওই সমীক্ষার কাজ শেষ হবে। তার রিপোর্ট নিয়ে এপ্রিল মাসে কলকাতায় খাদ্য সরবরাহ দফতরের জেলা আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করবেন। সেখানে বর্তমানে পাঁচটি বন্ধ চা বাগান ঢেকলাপাড়া, দলমোড়, রেডব্যাঙ্ক, সুরেন্দ্রনাথ এবং রিংটং-এর মালিকরা উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন, “ওই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া যে পাঁচটি বাগান বন্ধ রয়েছে সেগুলি খোলার ব্যপারেও কথা বলা হবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “দ্রুত সমীক্ষার কাজ শেষ করা হবে।” তিনি আরও জানান, ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানিতে একটি বড় গুদাম ঘর তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে খাদ্য সরবরাহ দফতর। গুদামে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম রাখা যাবে। এ ছাড়া ‘আরআইডিএফ’ প্রকল্পে উত্তরবঙ্গের ছয়টি জেলার বিভিন্ন জায়গায় গুদাম তৈরি করা হবে। দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও কালিম্পংয়েও গুদাম তৈরির কাজ করবে খাদ্য সরবরাহ দফতর। |