নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্য কংগ্রেসের নেতৃত্বে বদলের জন্য আলোচনা শুরু করে দিল হাইকম্যান্ড। দলের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, উপনির্বাচনে কংগ্রেস দু’টি আসন খোয়ানোয় এক দিক থেকে তাঁরা কিছুটা অস্বস্তিতে ঠিকই। কিন্তু এ-ও ঠিক যে, কংগ্রেস তিনটি কেন্দ্রেই কমবেশি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভোট পেয়েছে। বাম-বিরোধী ভোটেও ভাল রকম ভাগ বসিয়েছে তারা। আর এই কারণেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যস্তরে নেতৃত্ব পরিবর্তন করে দলকে আরও আগ্রাসী প্রচারে নামাতে চাইছে হাইকম্যান্ড।
সর্বভারতীয় কংগ্রেসের তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা শাকিল আহমেদ আজ বলেন, “উপনির্বাচনের ফলে দেখা যাচ্ছে যে, দু’টি আসনে তৃণমূল তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এই ফল দেখে রাজ্যের মানুষও বুঝতে পারছেন যে, বাম-বিরোধী বিকল্প শক্তি তৃণমূল নয়। বরং যাঁরা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন, তাঁরা হয়তো এখন আফসোস করছেন! কংগ্রেস আরও একটু আগ্রাসী হলে এবং মানুষকে বোঝাতে পারলে হয়তো নলহাটি আসনটিতেও জেতা সম্ভব হত।”
শাকিল প্রদেশ নেতৃত্বে পরিবর্তন নিয়ে অবশ্য আজ স্পষ্ট কিছু জানাননি। উপনির্বাচনের বিস্তারিত ফলাফল নিয়ে শাকিল দু’এক দিনের মধ্যেই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে রিপোর্ট দেবেন। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, উপনির্বাচনের ফলে উজ্জীবিত কংগ্রেসকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে কী করে আরও চাঙ্গা করা তা নিয়ে আলোচনার সঙ্গে প্রয়োজনে প্রদেশ নেতৃত্বে বদলের সুপারিশও করতে পারেন শাকিল। সে ক্ষেত্রে প্রদেশ সভাপতি পদে চার জনের নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। এঁরা হলেন, কেন্দ্রের দুই প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী এবং দীপা দাশমুন্সি, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানস ভুইঞাঁ এবং দেবপ্রসাদ রায়। দলের এক শীর্ষ নেতা জানান, মূলত অধীর এবং দীপার নাম বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, আজ কংগ্রেস দফতরে গিয়ে শাকিলের সঙ্গে বৈঠক করেন অধীর।
কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “আসলে উপনির্বাচনের ফল বুঝিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে কংগ্রেস কতটা প্রাসঙ্গিক। এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না থাকলে তৃণমূলের ফলও যে ভাল হবে না, তা-ও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।” ওই নেতার বক্তব্য, এই অবস্থায় কংগ্রেসের লক্ষ্যই হল পঞ্চায়েত ভোটে আরও আগ্রাসী প্রচারের মাধ্যমে তৃণমূলকে বেগ দেওয়া। যাতে জোটের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তাদের কাছে আরও স্পষ্ট হয়।
ওই নেতা অবশ্য এ-ও জানান, রাজ্য স্তরে কংগ্রেসের কোনও নেতাই তৃণমূলের সঙ্গে আর জোট চান না। তা ছাড়া সনিয়া নিজেও জয়পুরের চিন্তন শিবিরে বুঝিয়ে দিয়েছেন, জোটের জন্য কংগ্রেস আর হামাগুড়ি দেবে না। তাই পঞ্চায়েতে আরও ভাল ফল করে ও তৃণমূলকে বেগ দিয়ে জোটের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে চায় কংগ্রেস। সে ক্ষেত্রে যদি ফের জোট গড়ার পরিস্থিতি হয়, তখন কংগ্রেস তার নিজের শর্ত চাপানোর সুযোগ পাবে। এই সব অঙ্কেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব কোনও কোনও আগ্রাসী নেতা বা নেত্রীর হাতে দিতে চাইছে হাইকম্যান্ড। |