নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রেল বাজেটের পর তেরাত্তির কাটেনি। তারই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটি বড় মাপের রেল কারখানা গড়ার দাবি জানিয়ে বসলেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী।
রাজনৈতিক কারণেই পবন বনশলের বাজেটে সন্তুষ্ট নন তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু ওই বাজেট নিয়ে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী নিজেও যে খুব একটা খুশি হননি তা আজ তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন মনমোহন সিংহের কাছে দরবার জানিয়ে। আজ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ঘরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন অধীর। অধীর বলেন, “মুর্শিদাবাদে যাতে রেলের একটি কারখানা নির্মাণ করা হয় সেই দাবি জানাতেই গিয়েছিলাম।’’ প্রধানমন্ত্রী তাঁকে আশ্বাস দিলেও কবে কী ধরনের রেল কারখানা হবে সে বিষয়ে ব্যাখ্যায় যেতে চাননি তিনি। অধীর শিবির এখন রেল বাজেট নিয়ে বিতর্কের জবাবি ভাষণে ওই নতুন প্রকল্পটি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তৎপর রয়েছে।
সংসদে আগামী সোমবার থেকে রেল বাজেট নিয়ে বিতর্ক শুরু হবে। তবে তখন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বাংলাদেশ সফরে থাকার কথা অধীরবাবুর। ভারত বাংলাদেশকে সম্প্রতি ২০টি ট্যাঙ্ক ওয়াগন ও ২টি ব্রড গেজ ইঞ্জিন দিয়েছে। প্রণববাবুর সফরের সময় সেগুলির উদ্বোধন হওয়ার কথা। দেশে না থাকায় অধীর তাই তাঁর ব্যক্তিগত সচিবদের বিষয়টি তদারকি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অধীর শিবিরের বক্তব্য, সময়ের স্বল্পতার কারণে যদি বাজেটে বিতর্কে ওই প্রকল্পটি অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব না হয় তা হলে কয়েক মাস পর সংসদে মন্ত্রকের অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দ অনুমোদনের সময়ে ওই প্রকল্পটির ঘোষণা করা হবে।
চলতি রেল বাজেটে রাজ্যের জন্য সেই অর্থে বড় মাপের কোনও নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেননি বনশল। বিশেষ বাজেট বরাদ্দও বাড়েনি চলতি প্রকল্পগুলিতেও। ফলে বাজেটের পরই রাজ্যের বঞ্চনার প্রশ্নে কেন্দ্র ও অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণ শানায় তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও অধীরের যুক্তি ছিল, তিনি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। তাঁর স্বল্প ক্ষমতার মধ্যেই যতটা করা সম্ভব ততটা তিনি করেছেন। অধীর বলেন, “তা ছাড়া রাজ্যের তৃণমূল সরকার রেলের কাজে কোনও সাহায্য তো করছেই না উল্টে সব কাজে সমস্যা সৃষ্টি করছে। রাজ্যের অসহযোগিতায় রেল প্রকল্পের টাকা খরচ করা যাচ্ছে না। ফলে নতুন বরাদ্দ বাড়িয়ে লাভ কী?” বাজেটের পরেই অধীর ওই যুক্তি দিলেও বনশল যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গকে উপেক্ষা করছেন তা যে তিনি ভাল ভাবে নেননি তা আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবারের মাধ্যমেই বুঝিয়েয়েছেন তিনি। মুখে তিনি তা মানতে চাননি। অধীর বলেন, “সব প্রকল্প তো আর বাজেটে ঘোষণা করা যায় না। সময় ও পরিস্থিতির বিবেচনা করে অনেক প্রকল্পের বিষয়ে পরেও সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে।” যদিও অধীরের এই দরবার নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের সাংসদ সুলতান আহমেদ বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলছিলাম রেল বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বঞ্চনা হয়েছে। আজ অধীর চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের জন্য নতুন প্রকল্পের দরবার করে বুঝিয়েছেন আমাদের অভিযোগ সত্যি ছিল।” |