নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এ বারের জন্মদিনে দলের তরফে অন্য রকম উপহার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্য!
বিমান বসুর অনুপস্থিতিতে ১৫ দিনের জন্য রাজ্য সিপিএমের দায়িত্ব ৬৭ বছরের বুদ্ধবাবুর কাঁধে। এমনিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীই এখনও বঙ্গ সিপিএমের মুখ। বাড়ি থেকে আলিমুদ্দিন যাতায়াত এবং কলকাতার কাছেপিঠে কিছু কর্মসূচি এই রুটিনের ফাঁকেই তিনি ধরে রেখেছেন দলকে। সদ্য অসুস্থতা কাটিয়ে-ওঠা বুদ্ধবাবুকে আপাতত সাংগঠনিক কাজকর্মেরও দেখভাল করতে হচ্ছে শুক্রবার থেকে। রাজ্য সম্পাদক বিমানবাবু তাঁকেই দলের ভার দিয়ে গিয়েছেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য দলীয় সহকর্মীদের অনুরোধও জানিয়েছেন।
দেশ জুড়ে ‘সংগ্রাম বার্তা জাঠা’য় এ দিনই দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটের সঙ্গে কলকাতা ছেড়েছেন বিমানবাবু। কলকাতা থেকে যে কেন্দ্রীয় জাঠাটি ঝাড়খণ্ড, বিহার ও উত্তরপ্রদেশ হয়ে ১৪ মার্চ দিল্লি পৌঁছবে, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে এ দিন সকালে লাল পতাকা নেড়ে তার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছেন বুদ্ধবাবুই। অসুস্থতা থেকে ওঠার পরে জন্মদিনের সকালে এ দিনই প্রথম ফের প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। |
জাঠার সূচনা অনুষ্ঠানে বিমান বসু, প্রকাশ কারাট,
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও নিরুপম সেন। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। —নিজস্ব চিত্র |
শরীরের স্বার্থে সিগারেটকে আপাতত বিদায় জানিয়েছেন। দলের স্বার্থে পতাকা হাতে এবং দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্যে পরিবর্তনের কুড়ি মাস পরে তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বামেদের ভোটের হার আরও কমে গেল
কেন (যদিও তিন আসনে মোট
প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে বামেরাই এক নম্বরে), সেই ব্যাপারে জেলা থেকে খোঁজ-খবর শুরু করেছেন বুদ্ধবাবু-সহ আলিমুদ্দিনের নেতারা। প্রসঙ্গত, বিমানবাবু কলকাতায় না-ফেরা পর্যন্ত বামফ্রন্টের কাজকর্ম সামলাবেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তিন সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র, মদন ঘোষ ও রবীন দেব। রবীনবাবু অবশ্য বিমানবাবুদের সঙ্গেই জাঠা নিয়ে পুরুলিয়া পর্যন্ত যাচ্ছেন।
অসম ও ওড়িশা থেকে আসা দুই উপ জাঠা সঙ্গে নিয়ে কারাট-বিমানের জাঠা এ দিন রওনা দিয়েছে কলকাতা থেকে। ছোট একটি বাসে দীর্ঘ পথ পরিক্রমা করবেন তাঁরা। পথে যোগ দেবেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুভাষিনী আলি। জাঠার দাবিগুলির কথা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কারাট এ দিন যাত্রা শুরুর আগে জানান, দেশে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলাই তাঁদের লক্ষ্য। সাধারণ সম্পাদকের কথায়, “ত্রিপুরার মানুষও তাঁদের রায়ে বিকল্পের যে বার্তা দিয়েছেন, জাঠার মধ্যে দিয়ে সারা দেশে আমরা সেই বার্তা পৌঁছে দেব। ১০ হাজার কিলোমিটার ধরে জাঠা চলবে।” বিমানবাবুর বক্তব্য, “অতীতে সংযুক্ত কমিউনিস্ট পার্টি বা পরে সিপিএমের সূত্রপাতের পরে আমাদের দলের নেতৃত্বে একক ভাবে এমন জাঠা আগে হয়নি। আন্দোলন-সংগ্রামের বিকল্প নেই। এই পথেই ত্রিপুরার সরকার আরও বেশি সমর্থন পেয়েছে।”
কথা ছিল, কলকাতা জেলা সিপিএম মিছিল করে গাঁধী মূর্তি
পর্যন্ত জাঠাকে পৌঁছে দেবে।
বর্ষীয়ান রঘুনাথ কুশারী, নিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়দের এ দিন সেই লক্ষ্যেই পথ হাঁটতে দেখা গিয়েছে। আর মঞ্চে রয়ে গিয়েছেন মানব মুখোপাধ্যায়, কল্লোল মজুমদারের মতো তুলনায় তরুণ নেতারা! |