পঞ্চায়েত ভোটের জন্য প্রথা ভাঙবে বাজেটে
ঞ্চায়েত ভোটের জন্য বিধানসভা অধিবেশনের প্রথা ভেঙে রাজ্যপালের বক্তৃতা নিয়ে বিতর্কের আগেই বাজেট পেশ করার সিদ্ধান্ত হল পরিষদীয় সর্বদল বৈঠকে। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখেই বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে তাঁর দলের বিধায়কদের সংযত থাকার নির্দেশ দিলেন।
বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হবে আগামী ৮ মার্চ। তার প্রস্তুতির জন্য স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে শুক্রবার বিধানসভায় পরিষদীয় সর্বদল বৈঠক হয়। বৈঠকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। তৃণমূল জমানায় এ দিনই প্রথম বিধানসভার সর্বদল বৈঠকে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। স্পিকার জানান, ওই বৈঠকে থাকার আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী তাতে সাড়া দিয়েছেন। গত অধিবেশনে বিধায়কদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘিরে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়েছিল। এ বারের অধিবেশনে যাতে তেমন ঘটনা না ঘটে, তার জন্য স্পিকার এ দিনের বৈঠকে সকলের কাছে আবেদন জানান। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর দলকে পরিষদীয় রীতি মেনে চলার নির্দেশ দেন। শাসক দলের বিধায়কদের একাংশের বক্তব্য, বাজেট অধিবেশনে তাঁদের কেউ ফের অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে পড়লে পঞ্চায়েত ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে। তাই মুখ্যমন্ত্রী দলীয় বিধায়কদের সতর্ক করেছেন।
বিধানসভায় সর্বদল বৈঠক। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের ভাষণ দিয়ে অধিবেশন শুরু হওয়ার পর তা নিয়ে বিতর্কের আগেই ১১ মার্চ এ বারের বাজেট পেশ হবে। সাধারণত রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনার পর বাজেট পেশ হয়। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের জন্য তাড়াহুড়ো রয়েছে। রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে আলোচনার পরে বাজেট পেশ করতে হলে দেরি হবে। তার মধ্যে ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে নির্বাচনী বিধিতে বাজেট পেশ আটকে যাবে। সেই যুক্তিতে শাসক দল রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনার আগেই বাজেটের সব ক’টি বিষয় অনুমোদন করানোর প্রস্তাব দিয়েছিল স্পিকারকে। তিনি জানান, লোকসভায় ১৯৬৭, ১৯৬৯ এবং ১৯৯৫ সালে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আলোচনা না করে বাজেট পাশ করানোর নজির রয়েছে। স্পিকার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চান না, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর বাজেট পেশ নিয়ে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের ঘটনা ঘটুক।”
শাসক দলের ওই প্রস্তাবে বিরোধীরা বিশেষ আপত্তি করেনি। তবে বিধানসভা বিশেষজ্ঞ দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এ রকম ঘটনার নজির এ রাজ্যে বিশেষ নেই। ১৯৫২ সালে এক বার একই বছরে দু’ বার বাজেট এবং ভোট অন অ্যাকাউন্ট পাশ করাতে হয়েছিল। সেটা ছিল বিশেষ পরিস্থিতি। এ বার যা নেই। বিধানসভার অধিবেশনের দিন একটু এগিয়ে আনলেই প্রথা ভাঙতে হত না। স্পিকার জানান, ১৫ মার্চের মধ্যে বাজেট পেশ, ভোট অন অ্যাকাউন্ট অনুমোদন এবং অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল পাশ হবে। রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনা হবে ১৮ মার্চ থেকে। তার পর বিল নিয়ে আলোচনা হবে। নব নির্বাচিত তিন বিধায়ক সোমবার শপথ নেবেন বলেও স্পিকার জানান।
বৈঠকে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, বর্তমান সরকারের আমলে কোনও বিধানসভা অধিবেশনে বিরোধীদের আনা মুলতবি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়নি। ওই আলোচনার সুযোগ দিতে উদ্যোগী হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আর্জি জানান সূর্যবাবু। তখনই মুখ্যমন্ত্রী স্পিকারকে জানান, মুলতবি প্রস্তাব তাঁর অনুমোদন পেলে তা নিয়ে আলোচনায় সরকারের আপত্তি নেই। কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়াও বেসরকারি এবং মুলতবি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার দাবি জানান। পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, অধিবেশনের শেষ দিন বিরোধীদের আনা মুলতবি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.