শিশুখুনের অভিযোগে ধৃত মা ও তার প্রেমিক
ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়ার পরে বসিরহাটের স্বরূপনগর।
বিবাহ বহির্ভূত সর্ম্পকের কারণে সন্তানকে খুন করার অভিযোগ উঠল মা ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, পনেরো মাসের ওই শিশুটির নাম হৃদয় হোসেন শেখ। মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানার মধুপুর গ্রামের রেজাউল হকের সঙ্গে বছর দ’শেক আগে বিয়ে হয়েছিল সিরিফা ওরফে সভা বিবির।
ওই দম্পতির প্রথম সন্তান জন্মের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে সাংসারিক অশান্তি শুরু হয়। রাফিজুল নামে বিবাহিত এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে ওই মহিলার। বেশ কিছু দিন আগে রাফিজুলের সঙ্গে পালিয়ে যায় সিরিফা। ধরাও পরে। গ্রাম্য সালিশি সভায় সিরিফাকে তাঁর স্বামী রেজাউল হকের সঙ্গেই বসবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাঁদের পরে আরও দু’টি সন্তান হয়। তারই এক জন হৃদয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীর সঙ্গে বসবাস করলেও গোপনে পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে সর্ম্পক রেখে চলেছিল ওই বধূ। গ্রামে সে কথা জানাজানি হওয়ার গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফের বাড়ি থেকে পালায় ওই দু’জন। সঙ্গে ছিল হৃদয়। বসিরহাট থানার স্বরূপনগরের কচুয়া গ্রামে বাড়ি ভাড়া নেয় তারা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কচুয়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় হৃদয়ের দেহ। সিরিফা ও রাফিজুলের দাবি, খেলতে খেলতে জলে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে হৃদয়ের।
রাফিজুল ও সিরিফা। ছবি: নির্মল বসু।
যদিও এই যুক্তি মেনে নিতে পারেনি রেজাউলের বাড়ির লোকজন। রেজাউলের বাবা মন্টু শেখ বসিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, পুকুরে পড়ে মৃত্যুর গল্প বানানো। পরিকল্পনা করেই নাতিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে বৌমা তার বোনের কাছে নাতিকে রাখতে চেয়েছিল। বোন রাজি না হওয়ায় বৌমা বলেছিল, নতুন জীবনে পুরনো স্বামীর কোনও চিহ্ন সে রাখতে চায় না।
শুক্রবার খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সিরিফা ও তার প্রেমিককে। বসিরহাট থানার আইসি শুভাশিস বণিক বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহ ময়না-তদন্তের জন্য বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ সর্ম্পকে নিদিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়।”
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়া থানার পেটবিন্ধি এলাকায় লছমি মুন্ডা তার প্রেমিক রফিকুলের ইন্ধনে হত্যা করেছিল দেড় বছরের মেয়ে শর্মিলিকে। লছমি প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছিল তার কুকীর্তির কথা। সিরিফারা অবশ্য খুনের অভিযোগ মানতে চায়নি।
পুলিশকে সিরিফা বলে, “আমার স্বামীর সঙ্গে অন্য মেয়ের সর্ম্পক ছিল। তাই রাফিজুলের সঙ্গে ঘর ছাড়তে বাধ্য হই। বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলের হাতে বিস্কুট দিয়ে আমরা ঘরের কাজ করছিলাম। সে সময়ে ও বাইরে বেরিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে তলিয়ে যায়।” রাফিজুলের দাবি, “আমরাই তো পুলিশকে খবর দিয়েছি। আমরাই যদি খুন করব তো পালিয়েই যেতে পারতাম।”
ভিনরাজ্যে মায়ের হাতে শিশু খুনের উদাহরণ অমিল নয়। ইন্দৌর কিংবা দিল্লি। নানা সময়ে শিরোনামে এসেছে এই ধরনের ঘটনায়। সন্তানকে দুধে-ভাতে রাখার জন্য মায়েদের চিরায়ত কামনা কেন এ ধরনের ঘটনায় রূপান্তরিত হচ্ছে, তার উত্তর খুঁজতে হবে মানব মনের জটিল চিন্তন প্রক্রিয়ায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.