বিভিন্ন দাবিতে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা।
হস্টেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি ক্যান্টিনে খাবারের গুনগত মান বাড়ানোর দাবি তোলেন তাঁরা। এ দিন সকাল থেকেই মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের ঘরের সামনের কোলাপসিবল গেটে তালা ঝুলিয়ে তাঁরা অবস্থান-বিক্ষোভ করে। পরে তাঁরা স্মারকলিপি দেন অধ্যক্ষকে। এর আগেও অবশ্য লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও আমল দেয়নি বলে অভিযোগ।
অধ্যক্ষ প্রদীপচন্দ্র সাহা অবশ্য বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা চলছে। গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমস্যা মেটানো হবে।”
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ অনুমোদন পায়। এরপরেই ১০০ ছাত্রছাত্রী ওই কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু কোনও পরিকাঠামো ছাড়াই ক্লাস শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। অভিযোগ, ছাত্রছাত্রীদের জন্য এখনও নতুন হস্টেল তৈরি হয়নি। হাসপাতালের পুরনো নার্সিং-হস্টেলের দোতলায় অস্থায়ী হস্টেলে তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ডিসেম্বরে নতুন হস্টেল তৈরি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার কাজ এখনও শুরুই হয়নি।
গত রবিবার হস্টেলের শৌচাগারের জলের কল দুষ্কৃতীরা নিয়ে যাওয়ায় এ দিন শৌচাগারের জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে সমস্যা হচ্ছে। ক্যান্টিনের খাবার নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। প্রথম বর্ষের ছাত্র প্রদীপ মাহাতো, চিরঞ্জীব রায়, শান্তনু সাউ, গৌরব সাহার কথায়, “নামেই সস্তার ক্যান্টিন। খাবার নিম্নমানের। ক্যান্টিন খুব অপরিষ্কার। হস্টেলে নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। হস্টেলে ২৪ ঘন্টা প্রহরী থাকার কথা। কিন্তু তা নেই।”
এ দিকে মেডিকাল কলেজ চত্বরে মদ-গাঁজা-হেরোইনের ঠেক বসে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রছাত্রীরা জানান, দুষ্কৃতীরা তাঁদের অনুপস্থিতিতে হস্টেলে ঢুকে চুরি করছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। সন্ধ্যার পরে কলেজ চত্বরেই তাঁরা যাতায়াত করতে পারেন না। ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে দুষ্কৃতীরা কটূক্তি করে। বহরমপুর থানার আইসি মোহায়মেনুল হক জানান, তদন্তে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |