দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
নেই রক্ষণাবেক্ষণ
ধার নেই ত্রিফলায়
কোথাও স্ট্যান্ডে ঝুলছে ভাঙা শেড। কোথাও বা তিনটি শেডই উধাও। কোনওটির আবার একটি মাত্র শেডে আলো জ্বলে। বছর দুইয়ের মধ্যে এমনই হাল হয়েছে রাজপুর-সোনারপুর এবং বারুইপুর পুর এলাকার ত্রিফলা আলোগুলির। অভিযোগ উঠেছে, ঢাকঢোল পিটিয়ে ত্রিফলা স্ট্যান্ডগুলি লাগানো হলেও সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা সূত্রে খবর, সাংসদ তহবিলের প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে লাগানো হয়েছিল এই ত্রিফলা স্ট্যান্ডগুলি। বারুইপুর পুর এলাকাতে একই সময়ে প্রায় ১০০টি ত্রিফলা স্ট্যান্ড বসানো হয়। দু’টি পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই আলোগুলির জন্য ফি মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার ইলেকট্রিক বিল আসে।
দুই পুরসভাতেই বিরোধী বামেরা প্রশ্ন তুলেছেন, যদি ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব না হয়, তা হলে এত খরচ করে আলোগুলি বসানো হল কেন? উভয় পুর-কর্তৃপক্ষের পাল্টা যুক্তি, এলাকার সৌন্দর্যায়নের জন্যই ত্রিফলা স্ট্যান্ডগুলি বসানো হয়েছিল। এগুলি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে।
কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারুইপুর পুর এলাকার কলপুকুর, কাছারিবাজার সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে একাধিক ত্রিফলা স্ট্যান্ড বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নীলাদ্রি সেন বলেন, ‘‘যথেষ্ট যত্ন নিয়ে আলোগুলি বসানো হলেও সেগুলি রক্ষার জন্য কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।”
বারুইপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের শক্তি রায়চৌধুরী তাঁর এলাকার ত্রিফলা স্ট্যান্ডগুলির বেহাল দশার কথা অস্বীকার করে বলেন, “এই পুর এলাকার কোথাও একটি ত্রিফলা স্ট্যান্ডও ভাঙা নয়। যা রয়েছে তা পুর এলাকার বাইরে।”
রাজপুর-সোনারপুর পুর এলাকার কামালগাজি, সোনারপুর, হরিনাভি এলাকাতেও দীর্ঘ দিন ধরে একাধিক ত্রিফলা স্ট্যান্ড বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। স্থানীয় বাসিন্দা ইন্দ্র ভট্টাচার্যের কথায়: “পুরসভা শুধু ত্রিফলা স্ট্যান্ডগুলো বসিয়েই কাজ সেরেছে। পরে সেগুলোর উপরে নজর রাখেনি।”
কলকাতার পাশাপাশি রাজপুর, সোনারপুর ও বারুইপুরের বিভিন্ন এলাকায় ত্রিফলা আলো বসিয়ে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছিল। কিন্তু বছর দুয়েকের মধ্যেই সেই সৌন্দর্যায়নের এমন হতশ্রী দশায় ক্ষুব্ধ দুই পুর এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা।
রাজপুর-সোনারপুরের প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান এবং বর্তমান বাম কাউন্সিলর তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, “কোনও পরিকল্পনা ছাড়া কাজ করলে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক।” অবশ্য এ নিয়ে পুরসভার দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বর্তমান উপ-পুরপ্রধান এবং সোনারপুর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম। তাঁর কথায়: “ত্রিফলা আলো সারানোর পরিকাঠামো আমাদের মতো ছোট পুরসভার নেই। এই নিয়ে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করার কথা ভাবছি।”

ছবি: সুব্রত রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.