দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
জলকষ্ট তীব্র
শুধুই হাহাকার
শীতেই জলের ব্যবস্থা করতে হিমসিম খেতে হয়। গরমে কী হবে? এ প্রশ্নেই কপালে ভাঁজ পড়েছে বিষ্ণপুর এক এবং দুই নম্বর পঞ্চায়েত, সাতখালি, খলিবেড়িয়া, গৌরীপুর এলাকার বাসিন্দাদের। প্রতি বছরই গরমে এই সব অঞ্চলে জলকষ্ট চরমে ওঠে। অভিযোগ, বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও ফল মেলেনি।
ওই সব এলাকায় এমনিতেই পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। দিনে তিন বার জল আসার কথা থাকলেও এক বারের বেশি আসে না। কোনও কোনও দিন জল আসেই না। তা ছাড়া জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে নতুন করে কোনও জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার জলের সমস্যার কথা বললে নলকূপ বসিয়ে দেওয়া হয়। এ ভাবে বসানো অধিকাংশ নলকূপই কয়েক মাসের মধ্যে খারাপ হয়ে যায়। স্থানীয় কনক গুড়িয়ার কথায়: “বার বার আবেদন করেও জলের সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতি গরমেই পানীয় জল কিনতে হয়।”
এই সব এলাকায় জল সরবরাহ করা হয় নোদাখালির জলপ্রকল্প থেকে। জল সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, “নতুন করে জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, নোদাখালি প্রকল্পে ৪০০ জন পিছু একটি করে স্ট্যান্ড কল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগের জেলা পরিষদ সেই নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রচুর বেআইনি সংযোগ দিয়েছে। এর ফলেই এই সব এলাকায় জলের সঙ্কট হচ্ছে। তৃণমূল পরিচালিত বর্তমান জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ তরুণ রায় বলেন, “আগের সিপিএম পরিচালিত জেলা পরিষদ প্রচুর বেআইনি সংযোগ দিয়েছিল। তাই যোগানের থেকে চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে কয়েকটি পঞ্চায়েতে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির সুপারিশে কিছু নতুন জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।”
যদিও সিপিএম পরিচালিত জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যাদবপুরের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ এবং দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদই বেআইনি জলের সংযোগ দিচ্ছে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে পুরনো জেলা পরিষদের উপরে দোষ চাপানো হচ্ছে।” জেলা পরিষদের বর্তমান সভাধিপতি তৃণমূলের শামিমা শেখ বলেন, “পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী জেলায় নতুন জল প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আর সমস্যা থাকবে না।”

ছবি: অরুণ লোধ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.