উত্তর কলকাতা
পড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র
তালাবন্ধ পরিষেবা
তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে পুর-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। উত্তর দমদম পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি হয়েছে বছর দেড়েক আগে। জল, বিদ্যুৎ, শৌচাগার-সহ সব সুবিধাই রয়েছে নবনির্মিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভবনে। অভিযোগ উঠেছে, শুধুমাত্র উদ্বোধন হয়নি বলেই কেন্দ্রটি চালু হচ্ছে না। ফলে বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে ছুটতে হচ্ছে অন্য ওয়ার্ডে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফতুল্লাপুর মধ্যপাড়ার ঈদগাঁ ময়দানে পুরসভার পক্ষ থেকে প্রায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি করা হয়। নির্মাণ সম্পূর্ণ হয় ২০১১ সালের মাঝামাঝি। কমবেশি ৪০০ বর্গফুটের ওই ভবনে জল, বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার কাজও সম্পূর্ণ।
স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের জন্য নির্মিত হয়েছে শৌচাগার। কিন্তু ভবনটিতে তালা ঝুলিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকেরা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসতে না পারায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে গর্ভবতী ও শিশুদের ঠিকমতো পরিষেবাও দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ। জ্বর, সর্দি, কাশি, বমি এবং ডায়েরিয়ার মতো রোগের জন্যও অসুস্থদের ছুটতে হচ্ছে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
৩ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট ফিঙ্গা এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নিয়মিত খোলা হলেও সেটি দূরে হওয়ায় যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। ভবনটি চালু না হওয়ায় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য যে দু’জন স্বাস্থ্যকর্মী আছেন তাঁদেরও স্থায়ী বসার ব্যবস্থা নেই। পোলিও টিকাকরণ শিবিরও বসছে বিভিন্ন স্কুল ও ক্লাবঘরে।
উত্তর দমদম পুরসভার স্বাস্থ্য পরিষেবা দ্বিস্তরীয়। প্রথম স্তরে রয়েছে পুরসভার নিজস্ব হাসপাতাল। যেখানে রয়েছেন মোট ৯ জন চিকিৎসক এবং বেশ কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্মী। দ্বিতীয় স্তরে পুরসভার ৩১টি ওয়ার্ডের জন্য রয়েছে ২৬টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। ‘আর্বান প্রাইমারি হেল্থ কেয়ার সার্ভিস’ প্রকল্পের অধীন এই কেন্দ্রগুলির জন্য রয়েছেন ১০৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
এই কর্মীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে বসে মা ও শিশুকল্যাণে বিভিন্ন পরামর্শ ও ওষুধ দেন, প্রাথমিক চিকিৎসাও করেন। যে সব ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই, সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন ও ওষুধের জন্য সরকারি অর্থের পাশাপাশি পুরসভাও অর্থ বরাদ্দ করে।
উত্তর দমদমের পুরপ্রধান সিপিএমের সুনীল চক্রবর্তী বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে। উদ্বোধনের দিন ঠিক করার জন্য ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে বলেছি। উনিই দিন স্থির করে জানাবেন।”
৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের সুলতানা বানু অবশ্য বলেন, “উনি ঠিক বলছেন না। কোন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বসবেন এবং কবে উদ্বোধন হবে সে সবই চেয়ারম্যান স্থির করবেন। পুরসভার পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হওয়ায় তালা ঝুলিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। ওয়ার্ডে আর কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। স্থায়ী বসার ব্যবস্থা না থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীরাও ঠিকমতো পরিষেবা দিতে পারেন না।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.