ভারতে পা দিয়েই সুনীল ছেত্রীর দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন নেহরু কাপে। শনিবার দ্বিতীয় পরীক্ষা শুরু ভারতীয় ফুটবল দলের সেই ডাচ কোচ উইম কোভারম্যান্সের। ইয়াঙ্গনে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে তারই প্রথম ধাপ চাইনিজ তাইপে।
পারফরম্যান্স গ্রাফ নিচের দিকে হলেও নোবেল শান্তি-পুরস্কারজয়ী আন সান সু কি-র শহরে যদিও আত্মবিশ্বাসে খামতি নেই মেহতাব-লালকমলদের। ইয়াঙ্গনে ভারতীয় দলও যেন শান্ত-স্থিতধী। আশাবাদী কোভারম্যান্সও। যদিও মুখে বিনয় তাঁর। ইয়াঙ্গনে সাংবাদিকদের বলেছেন, “কোনও দলকেই হালকা ভাবে দেখার প্রশ্ন নেই। ম্যাচের রাশ নিজেদের হাত থেকে বার হতে দেওয়া চলবে না কিছুতেই।”
প্রতিপক্ষ চাইনিজ তাইপের বর্তমান ফিফা র্যাঙ্কিং ভারতের চার ধাপ পিছনে। ১৭১ নম্বর। এক বছর আগে দু’দলের শেষ সাক্ষাতে তাদের ৩-০ হারিয়েছিল ভারত। কিন্তু রহিম নবিদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স কিছুটা হলেও চিন্তায় রাখছে। মাত্র চব্বিশ দিন আগেই দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচে প্যালেস্টাইনের কাছে বিরতিতে এগিয়ে থেকেও ২-৪ হারতে হয়েছে কোভারম্যান্সের দলকে। তারও আগে সিঙ্গাপুরের কাছে হার। শেষ জয় গত সেপ্টেম্বরে নেহরু কাপ ফাইনালে ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে।
যে পরিসংখ্যান শুনে পর্তুগাল ফেরত ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী বলেছেন, “প্যালেস্টাইন ম্যাচের ছোটখাটো ভুলগুলো শুধরে নেওয়া গিয়েছে। অতীত না ভেবে চাইনিজ তাইপের বিরুদ্ধে জেতার জন্যই মুখিয়ে রয়েছে সবাই।” ২০০৮-এ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ফাইনালেই হ্যাটট্রিক রয়েছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ভারতের জার্সি গায়ে ৩৮ গোল করা সুনীলের। সেই ফর্ম এ বারও ধরে রাখতে মরিয়া চার্চিলের স্ট্রাইকার। |
তাইপেই ম্যাচের হোমওয়ার্ক। শুক্রবার ইয়াঙ্গনে সুনীলদের প্র্যাক্টিস। —নিজস্ব চিত্র |
থুওয়ান্না স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন হলে পরের বছর মলদ্বীপে আট দলীয় এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের মূল পর্বের ছাড়পত্র হাতে আসবে সুব্রত- গৌরমাঙ্গীদের। তাই ইয়াঙ্গনে বসেই ‘মিশন মলদ্বীপ’-এর পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার ছক কষছেন কোভারম্যান্স। পুণেতে দু’সপ্তাহের আবাসিক শিবিরের ফলে ফিটনেস লেভেল কিছুটা ভাল জায়গায়।
চাইনিজ তাইপের বিরুদ্ধে গোলে করণজিৎই প্রথম পছন্দ ডাচ কোচের। রক্ষণে ডেঞ্জিল, গৌরমাঙ্গী, গুরজিন্দরদের সঙ্গে পৈলান অ্যারোজের শৌভিক ঘোষকে প্রথম দলে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। মাঝমাঠে প্যালেস্টাইন ম্যাচের দুই গোলদাতা রহিম নবি এবং ক্লিফোর্ড মিরান্ডার সঙ্গে মেহতাব এবং লেনি। আক্রমণে সুনীলের সঙ্গে জেজে না অলউইন তা মাঠে নামার আগে ঠিক হবে বলে খবর।
শেষ পাঁচ ম্যাচে চাইনিজ তাইপের জালে বল ঢুকেছে ২০ বার। ড্র এক বার। হার চার বার। তা সত্ত্বেও বিপক্ষ স্ট্রাইকার চেন পো-লিয়াংয়ের গোলের জন্য মরিয়া প্রয়াসকে গুরুত্ব দিচ্ছে ভারতীয়রা।
ব্রিটিশ কোচ বব হাউটনের ফুটবল দর্শন এনে দিয়েছিল দোহায় এশিয়া কাপের ছাড়পত্র। কোভারম্যান্স জমানায় ইয়াঙ্গন, মলদ্বীপের হার্ডল পেরিয়ে ২০১৫-এ অস্ট্রেলিয়ায় এশিয়া কাপে যেতে পারবে কি ভারত? তারই দৌড় শুরু শনিবার মায়ানমারের মাটিতে। |