|
|
|
|
|
|
|
আপনার স্বাস্থ্য ১: এ রূপে ভোলাব তোমায় |
|
টাক বা বেঢপ গড়ন
কোনও সমস্যাই নয়
কিন্তু কেমন করে? ডা. মনোজ
খন্না-র মুখোমুখি রুমি গঙ্গোপাধ্যায় |
|
|
মধ্য তিরিশেই মাথাজুড়ে তেল চকচকে টাক বা থলথলে ভুঁড়ি! পছন্দ নয়? পাল্টে ফেলুন। মাথা ভরে যাবে এক ঢাল চুলে। আসলে শুধু মেয়েরা নন। সৌন্দর্য সংক্রান্ত নানা সমস্যায় জেরবার আজকের ছেলেরাও। ছেলেদের বড় সমস্যা টাক। বাদ নেই তাবড় সেলিব্রিটিরাও। সৌন্দর্য অটুট থাকুক কে না চায়!
এই যেমন টাক নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন স্বয়ং রবি শাস্ত্রী। এ নিয়ে এক মজার গল্পও আছে। এক সময় দেখা গেল রবির ফাঁকা মাথা চুলে ভরে গেছে। মাথায় টাকের লেশ মাত্র নেই! গাওস্কর তো তা দেখে তাজ্জব। চাপাচাপিতে শাস্ত্রী শেষমেশ বললেন, কলকাতার এক চিকিৎসকের কাছ থেকে চাইনিজ অয়েল কিনে লাগিয়েছেন!
পরে গাওস্কর কলকাতায় এলে সেই চিকিৎসকের খোঁজ লাগান, যাঁর কাছে চাইনিজ অয়েল পাওয়া যায়। এ বারে রহস্য ফাঁস করেন অরুণলাল। বললেন, চাইনিজ অয়েল-টয়েল নয়, রবি স্রেফ হেয়ার ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট করিয়েছেন। আসলে অরুণলালও ওই একই চিকিৎসকের কাছ থেকে হেয়ার ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট করিয়েছিলেন। শুধু এঁরাই নন, দিলীপ বেঙ্গসরকার, রজার বিনি, ভেস পেজ, হর্ষ ভোগলের মতো অনেকেই কলকাতায় এসে টাকে চুল বসিয়ে গিয়েছেন। চুল বসানোর পর বিপদেও পড়েছিলেন ভেস পেজ। ব্যাঙ্কক এয়ারপোর্টে আটকে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। পাসপোর্টের ছবির সঙ্গে তখনকার ভেসকে আর মেলানো যাচ্ছিল না।
যিনি এঁদের মাথা চুলে ভরে দিয়েছেন, সেই চিকিৎসক মনোজ খন্না জানালেন, ‘‘অবশ করে নিয়ে মাথার পিছন থেকে চুল এবং চামড়ার স্ট্রিপ তুলে সামনের ফাঁকা জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হয়। তার ওপরই পরে নতুন করে চুল গজাবে। সে চুল আজীবনের সঙ্গী। পড়বে না।” এমনকী মাথায় চুল কম থাকলে শরীরের অন্য অংশ থেকেও চুল এনে মাথায় বসানো হয়। চুল ঘন করতে আসল চুলের সঙ্গে কয়েকটা নকল চুলও বসিয়ে দেওয়া হয়। দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই কাজ হাসিল। খরচ ৭০ টাকা প্রতি ফলিকল।
এর পর দু’একটা নিয়ম মেনে চললেই হল। এই যেমন দিন তিনেক কোনও রকম তেল বা স্প্রে লাগানো যাবে না। মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই ভাবে পাতলা চুল ঘন করে দেওয়া হয়। সে চুল বড় হবে, লম্বা হবে, কিন্তু কোনও দিনও পড়বে না। শ্যাম্পু করতে পারবেন, আঁচড়াতে পারবেন, করা যাবে মনোমতো স্টাইলও! এমনই দাবি ডা. খন্নার।
এ সবই কসমেটিক্স সার্জারির খেল! শুধু টাকে চুল গজানো বা মুখের ছোটখাটো সমস্যা নয়, বদলে যেতে পারে চেহারার আদলও। তাই বেঢপ চেহারার সমাধানও এখন হাতের মুঠোয়। ডা. খন্নার অভিজ্ঞতায়, বছর কয়েক আগে মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় বেস্ট ফিগারের খেতাব পেয়েছিলেন এমন এক জন এসেছিলেন তাঁর কাছে। দিল্লিতে ‘ইটালিয়ান ফ্যাশন-শো’-এ সেই মেয়েই সমস্যায় পড়েছিলেন ফিগার নিয়ে! যে পোশাকটি পরতে হবে সেটি খানিকটা টাইট হচ্ছিল। এ দিকে হাতে মাত্র তিন সপ্তাহ। চটজলদি সমাধান হিসেবে করা হয় লাইপোসাকশন। কোমর থেকে দেড় ইঞ্চি মতো কমিয়ে দেওয়াতেই সমস্যার সমাধান।
হলিউড-বলিউডের বেশির ভাগ অভিনেতা-অভিনেত্রীর সৌন্দর্যের পেছনে রয়েছে কসমেটিক্স সার্জারির কারিকুরি। বিপাশা, সুস্মিতা বা রাখি সাওন্তের ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্টেশন সবার জানা।
ডা. খন্না জানালেন, ফ্যাট সেল বের করে দেওয়া হয়, তাই এক বার লাইপোসাকশন করলে আর সে জায়গায় মেদ জমবে না। দু’তিনটে ছোট ছোট ফুটো করে চর্বি বের করে দেওয়া হয়। মোট ওজনের ১০% চর্বি বের করা যায়। এর পর কয়েক দিন ইলাস্টিক বেল্ট পরলেই হল। দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যেই পুরো ব্যাপারটা হয়ে যাবে।
তবে সবাই যে নিছক সৌন্দর্য বাড়াতেই আসেন, তা নয়। কেউ কেউ আসেন প্রয়োজনের খাতিরেও। ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্টেশনের ক্ষেত্রে এ রকম বহু ঘটনা রয়েছে। বাচ্চা হওয়ার পর অনেকের ব্রেস্ট ঝুলে যায়। ছোট ব্রেস্ট নিয়েও অনেকে হীনমন্যতায় ভোগেন। ড. খন্নার কাছে ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করিয়েছেন, এমন একজন মহিলা জানালেন ব্রেস্ট ছোট থাকায় বিয়ের পর তাঁদের দাম্পত্য জীবন খাদের কিনারে পৌঁছে গিয়েছিল। এ যেন ‘শূন্য এ বুকের’ বাস্তব সংস্করণ। পরে ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করিয়ে মেয়েটি হারানো কনফিডেন্স ফিরে পান।
শোনা যায়, ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করালে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা। সত্যিই কি তাই? আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ডা. খন্না জানালেন, ‘‘বরং ব্রেস্টের গড়ন ঠিক করে দিলে জীবনযাপন অনেকটা বদলে যায়। বাচ্চাকে ব্রেস্ট ফিড করাতেও সমস্যা হবে না। ছেলেদের ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্রেস্ট বড় হয়। সে ক্ষেত্রেও ব্রেস্টকে স্বাভাবিক আকার দেওয়া হয়। নিপল-এর মধ্যে দিয়ে এমন ভাবে ইমপ্ল্যান্ট করা হয় যে কোনও দাগ থাকে না। না বললে কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়, যে ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করানো হয়েছে।’’
যোগাযোগ:
২২৮২-৮৫০০
|
|
|
|
|
|