অর্থনীতির রোগ ধরে রঘুরাম মেলালেন সমীক্ষা-বাজেটকে
মার্কিন অর্থনীতিতে যে মন্দা আসতে চলেছে, ২০০৮-এর বহু আগেই সেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তিনি। এ বার ভারতীয় অর্থনীতির রোগ নির্ণয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন রঘুরাম রাজন। অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা রঘুরাম ধরে ফেলেছিলেন, এই অসুখটা হল আমদানি-রফতানির ঘাটতি। তাঁর সেই ভাবনারই প্রতিফলন ঘটেছে এ বারের আর্থিক সমীক্ষা এবং বাজেট-বক্তৃতায়। ঘাটতির অসুখ সামলাতেই কড়া দাওয়াই দেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
রঘুরাম রাজন
বাজেটের আগের দিন সংসদে যে আর্থিক সমীক্ষা পেশ হয়, তা তৈরির দায়িত্বে থাকেন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যার পাশাপাশি অর্থনীতির উন্নতিতে কী কী করা প্রয়োজন, তারও ইঙ্গিত দেওয়া থাকে সমীক্ষায়। কিন্তু সব সময় যে শুধুই অর্থনৈতিক যুক্তি মেনে বাজেট তৈরি হয়, তা নয়। কারণ, ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেও বাজেট করতে হয় অর্থমন্ত্রীকে। কিন্তু এ বারের বাজেট ব্যতিক্রম। আর্থিক সমীক্ষা ও বাজেট যে এ বার একই সুরে গাঁথা রয়েছে, তা চিদম্বরম নিজেই জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “আর্থিক সমীক্ষা ও বাজেট বক্তৃতা, দু’টিকে পাশাপাশি রেখে পড়তে হবে।” অর্থাৎ সমীক্ষাতে যে সব পদক্ষেপকে আশু কর্তব্য বলে রঘুরাম রাজন চিহ্নিত করেছেন, সেগুলিই বাজেটে প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছেন চিদম্বরম।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রঘুরাম এ বারের আর্থিক সমীক্ষার প্রচ্ছদেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, দেশের অর্থনীতির সমস্যা কোথায়, তার জন্য কী করা প্রয়োজন। অন্যান্য বার সমীক্ষার প্রচ্ছদে সাধারণত কোনও একটি অর্থনৈতিক মডেলের ছবি বা লেখচিত্র দেওয়া থাকত। কিন্তু এ বারের প্রচ্ছদে গ্রাফিক্সেতুলে ধরা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চিন, ইন্দোনেশিয়া ও কোরিয়ার তুলনায় ভারতের অবস্থান ঠিক কোথায়। অর্থাৎ ভারতকে যে অন্যান্য দেশের চেয়ে রফতানি বাড়াতে হবে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত সেখানেই ছিল।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, লেনদেনের ঘাটতি কমানোর আরও একটি উপায় হল, ভারতের বাজারে আরও বেশি বিদেশি লগ্নি। কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর্স, ফিচ, মুডি’জ-এর মতো আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থাগুলি ভারতে লগ্নি করার বিষয়টিতে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। বিদেশি লগ্নিকারীরাও ভারত সম্পর্কে উদাসীন। বিদেশি বিনিয়োগ টানতে গেলে যে রাজকোষ ঘাটতিও সামাল দিতে হবে, সে বিষয়ে চিদম্বরম ও মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার মধ্যে কোনও মতভেদ ছিল না। লেনদেনের ঘাটতি ও রাজকোষের ঘাটতির এই যোগসূত্র বুঝেই অর্থমন্ত্রী খরচে রাশ টানতে উদ্যোগী হন।
অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশের পরে কী বলছেন রঘুরাম রাজন? তাঁর বক্তব্য, বাজেট তৈরির সময় অর্থমন্ত্রীর মাথায় ভাবনা ছিল যে, সরকারের রাজকোষের ছবিটা আগে ভাল করতে হবে। যদি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস করেন যে, সরকারের রাজকোষ ঠিক আছে, তা হলে সেটাই বিনিয়োগ ও সঞ্চয়ের পক্ষে সবথেকে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে। তিনি মনে করেন, আরও বেশি লগ্নি, আরও বেশি সঞ্চয় প্রয়োজন। এ বারের বাজেটের সেটাই ছিল প্রধান লক্ষ্য। কারণ, সরকারের হাতে টাকা থাকলে সঞ্চয় বা বিনিয়োগের জন্যও উৎসাহ দেওয়া যাবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.