ডিজেলেও লাফ অচিরেই
পেট্রোলের দাম বাড়ায় কেন্দ্র আক্রমণের মুখে
ংসদে বাজেট পেশের পর ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ১ টাকা ৪০ পয়সা বাড়িয়ে দিল তেল বিপণন সংস্থাগুলি। ফলে কলকাতায় ভ্যাট নিয়ে প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৮.৩৪ টাকা। দু’সপ্তাহ আগেই পেট্রোলের দাম দেড় টাকা বাড়ানো হয়েছিল। আজ ফের দাম বাড়ায় স্বাভাবিক ভাবেই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় নেমেছে বিরোধী দলগুলি। তৃণমূলের বক্তব্য, ইউপিএ সরকার আম-আদমির উপরে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে ইন্ডিয়ান অয়েলের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের দাম বেড়েছে। কমেছে টাকার দাম। এই দু’টি কারণে তেল আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় তেলের দাম আর এক দফা বাড়াতে হয়েছে। সরকারি সূত্রে ইঙ্গিত, অচিরে বাড়তে পারে ডিজেলের দামও।
পেট্রোলের মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া বিনিয়ন্ত্রণের পর মাসে দু’বার করে বৈঠক করে তেল বিপণন সংস্থাগুলি। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের দামের ওঠা-পড়া ও আনুষঙ্গিক বিষয় খতিয়ে দেখে। এবং সেই অনুযায়ী পনেরো দিন অন্তর পেট্রোলের দাম বাড়ানো-কমানো হয় এখন। কিন্তু অর্থনীতির এই যুক্তি রাজনীতি শোনে না। পেট্রোলের দাম বাড়ার কারণে অস্বস্তি খোদ কংগ্রেস শিবিরেই। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, মূলবৃদ্ধির প্রশ্নে সরকারকে আক্রমণের জন্য তাঁদের অস্ত্র এতে আরও ধারালো হচ্ছে। দাম বাড়ানোর সমালোচনা করেছে ইউপিএ-র প্রাক্তন শরিক তৃণমূলও। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-তৃণমূলের ভোট ভাগ হলে যে বামেদের ফায়দা, সেটা ফের প্রমাণ হয়ে গিয়েছে রাজ্যের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে। তবু মূল্যবৃদ্ধির কথা জানার পরে তৃণমূলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “এই সরকার মানুষের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা নিজেরাই জানে না মূল্যবৃদ্ধির জেরে আম-আদমির কী হাল হচ্ছে। আরও এক দফা পেট্রোলের দাম বাড়ানোয় সমস্ত জিনিসের দাম বাড়বে। তৃণমূল আম-আদমির লড়াইয়ের পাশে রয়েছে।”
গত কাল পেশ হওয়া বাজেটকে জনবিরোধী আখ্যা দিয়ে বিজেপি এখন এমনিতেই ইউপিএ সরকারের সমালোচনায় মুখর। বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ আজ দলের কর্মসমিতির বৈঠকে বলেন, “মূল্যবৃদ্ধির প্রশ্নে সরকারকে আরও কোণঠাসা করার সময় এসেছে।” এর পরই আক্রমণে নতুন ইন্ধন জোগায় পেট্রোলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা। বিজেপি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে, আর সরকার নির্দয়ের মতো পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়িয়েই চলেছে। আম-আদমির স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় এসে কংগ্রেস প্রতিনিয়ত বিশ্বাসঘাতকতা করছে তাদের সঙ্গে।”
পেট্রোলের দাম বাড়ানোর বিষয়টি আর এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও বিরোধী আক্রমণের মুখে এ দিন বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হন কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভি। তিনি বলেন, “দেশ ও দুনিয়া কঠিন আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে চলেছে। অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমগত তা সবিস্তার ব্যাখ্যা করেছেন গত কাল। তা ছাড়া কোনও সরকারই খুশি হয়ে জনতার ওপর বোঝা চাপাতে চায় না। কিন্তু বিজেপি সব জেনেও সস্তার রাজনীতি করছে।”
তবে রাজনীতির লড়াই যাই হোক অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, পেট্রোলের দাম বাড়াটা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। এতে তেল বিপণন সংস্থাগুলির ক্ষতির বোঝা কমবে। তা ছাড়া, পেট্রোলের দাম বাড়ার জন্য সামগ্রিক ভাবে যদি এর চাহিদা কমে তবে আরও কম পরিমাণ কাঁচা তেল আমদানি করতে হবে সরকারকে। তাতে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট) কমে আসবে।
তেল বিপণন সংস্থাগুলির তরফে জানানো হয়েছে, দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় ছিল না তাদের কাছে। কারণ, কাঁচা তেলের দাম বাড়ায় ডিজেল ও কেরোসিন বাবদ ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। ফেব্রুয়ারিতে ডিজেলের দাম ৪৫ পয়সা বাড়ানো সত্ত্বেও এখনও প্রতি লিটারে ১০ টাকা ৭২ পয়সা লোকসান হচ্ছে। এই অবস্থায় সরকারি সূত্রেই বলা হচ্ছে, কিছু দিনের মধ্যে ডিজেলের দামও লিটার প্রতি পঞ্চাশ পয়সা বাড়ানো হতে পারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.