প্রণবের ঢাকা সফরে সঙ্গী মুকুল, আশায় দিল্লি
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেপ্টেম্বরে ভারতে আসার আগে ঢাকাকে সদর্থক বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঢাকা সফরে সঙ্গী হিসেবে মুকুল রায়কে পাঠাচ্ছেন তিনি। যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কেন্দ্র। বিদেশ মন্ত্রকের বাংলাদেশ বিষয়ক যুগ্মসচিব হর্ষবর্ধন সিংলা আজ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সাংসদ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বাংলাদেশ যাচ্ছেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর ফলে প্রতিবেশী দেশে ভাল সঙ্কেত যাবে।”
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যে সাংসদ দলটি বাংলাদেশে যাচ্ছে, তাতে মুকুল ছাড়াও রয়েছেন সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, বিজেপি-র চন্দন মিত্র, রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরি এবং অসমের কংগ্রেস নেতা ভুবনেশ্বর কলিতা। প্রতিনিধি দলে ভারসাম্য তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে ঠিকই, তবে মুকুলের অন্তর্ভুক্তিই সব চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, তিস্তা চুক্তি ও স্থলসীমান্ত চুক্তি। এই দুই চুক্তিতেই পশ্চিমবঙ্গের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
মমতার আপত্তিতেই প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেও ঢাকার সঙ্গে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেনি দিল্লি। কিন্তু বাংলাদেশে নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, এই চুক্তি করার ততই চাপ বাড়াচ্ছে হাসিনার সরকার। সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহ এই চুক্তির ব্যাপারে বাংলাদেশকে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু যে অঙ্গরাজ্যের উপরে চুক্তির সরাসরি প্রভাব পড়বে, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় তাকে উপেক্ষা করে চুক্তি করা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে কূটনীতিকদের দ্বিমত রয়েছে। সেই কারণে গত মাসে ঢাকা গিয়ে বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বলেছেন, “মমতা বাংলাদেশের বন্ধু। তিস্তা নিয়ে তাঁর আপত্তির কিছু কারণ রয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় তাঁর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নিষ্পত্তির চেষ্টা করছি।”
তিস্তা চুক্তির পাশাপাশি ভোটের আগে স্থলসীমান্ত চুক্তিও রূপায়ণ করতে মরিয়া হাসিনার সরকার। এই চুক্তিতেও তৃণমূলের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থেকে যাচ্ছে। এই চুক্তিটি সংসদে পাশ করানোর জন্য দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। বিজেপি-র পাশাপাশি তৃণমূলের সঙ্গেও তাই এই চুক্তি নিয়ে সম্প্রতি দফায় দফায় কথা বলেছেন খুরশিদ এবং বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা।
মুকুলের বাংলাদেশ সফরের অর্থ অবশ্য মোটেই এই নয় যে, তিস্তা চুক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের যাবতীয় আপত্তি মুছে গিয়েছে। রাজ্যের স্বার্থ বিপন্ন হয় এমন কিছু তিনি করবেন না এই অবস্থানেই অনড় রয়েছেন মমতা। তিস্তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বাংলাদেশের দূত একাধিকবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করলেও সেই আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। তবে কলকাতায় বাংলাদেশের নতুন ডেপুটি হাই কমিশনার আবিদা ইসলাম মমতার সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকেও মমতাকে বোঝানো হয়েছে সীমান্ত-রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নতি কেন প্রয়োজন। গত দু’বছর ধরে সন্ত্রাস দমনে কী ভাবে ঢাকা ভারতের পাশে রয়েছে সে কথাও সবিস্তার রাজ্যকে জানানো হয়েছে।
গত দু’মাস ধরে ঢাকা সম্পর্কে মনোভাব কিছুটা নরম করেছেন মুখ্যমন্ত্রীও। কলকাতা বইমেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি জানান, দুই বাংলার মধ্যে রাজনৈতিক ব্যবধান তৈরি হয়েছে। ব্যবধান দূর করতে চেয়ে সে দিন মমতা বলেছিলেন, “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।” রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সফরের সুবাদে সে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন মুকুল। সে দেশের আশা-আকাঙ্ক্ষাও কাছ থেকে দেখবেন তিনি। যা তিনি পৌঁছে দিতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.