নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে তৃণমূলের একটি কার্যালয় বেআইনিভাবে গড়ে উঠেছে, এই অভিযোগে সরব হলেন এলাকার বাসিন্দারা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে এডিডিএ-র চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। নিখিলবাবু জানান, ইতিমধ্যেই বেআইনি ওই নির্মাণ ভেঙে ফেলা হবে বলে নোটিস পাঠানো হয়েছে এডিডিএর তরফে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টারের চতুরঙ্গ ময়দানের পাশে উদয়শঙ্কর পথ ও অবনীন্দ্রনাথ বীথির সংযোগস্থলে তৃণমূলের ওই দলীয় কার্যালয়টি অস্থায়ীভাবে অনেক দিনই রয়েছে। এত দিন সেটি বাঁশের ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা পাকা করার কাজ শুরু হতেই নড়েচড়ে বসেন এলাকার প্রবীণ বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বেআইনি ভাবে এডিডিএ’র জায়গা দখল করে এ ভাবে পাকা অফিস বানানো যাবে না। এডিডিএ’র চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক নিখিলবাবুর কাছে লিখিতভাবে ওই বেআইনি নির্মাণ বন্ধের আর্জিও জানান তাঁরা। এর পর এডিডিএ’র আধিকারিকেরা এসে খতিয়ে দেখে ওই নির্মাণ ‘বেআইনি’ বলে জানিয়ে দেন। এডিডিএ’র তরফে লিখিত নোটিস দিয়ে জানানো হয়, অবিলম্বে ওই নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে। অন্যথায় তা ভেঙে দেবে এডিডিএ।
লোকসভা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় এডিডিএ’র জমি দখল করে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় গড়ে তোলার প্রবণতা শুরু হয়। বিধানসভা নির্বাচনের পরে তা আরও বেড়ে যায়। এমনকী, দলের বিভিন্ন গোষ্ঠী আলাদা আলাদা করে নিজেদের কার্যালয় গড়ে তোলে। বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে বছরখানেক আগে ওই ধরনের বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দিতে উদ্যোগী হন এডিডিএ’র তৎকালীন চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ইদানীং আবার নতুন করে সরকারি জমি দখল করে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় গড়ার প্রবণতা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ জানান বাসিন্দারা। এডিডিএ’র বর্তমান চেয়ারম্যান নিখিলবাবুর অবশ্য দাবি, সিটি সেন্টারের মতো শহরের অন্যত্রও সরকারি জমি দখল করে গড়ে ওঠা যে কোনও নির্মাণ ভেঙে ফেলা হবে। তিনি বলেন, “জমির পরিমাণ সীমিত। সরকারি জমি দখল করে কোনও ধরনের বেআইনি নির্মাণই বরদাস্ত করা সম্ভব নয়।” তৃণমূল সূত্রেও খবর, দলীয় নেতৃত্বও যেখানে সেখানে গজিয়ে ওঠা এই দলীয় কার্যালয়গুলি বন্ধ করতে চাইছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটি সেন্টার এলাকার এক তৃণমূল নেতা বলেন, “স্থানীয় নেতাদের উদ্যোগেই এই বেআইনি দলীয় কার্যালয়গুলি গড়ে উঠেছে। বেশিরভাগ কার্যালয়েই কোনও সাংগঠনিক কাজকর্ম হয় না। দলীয় নেতৃত্বও এগুলি অনুমোদন করে না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি (শিল্পাঞ্চল), শহরের মেয়র তথা বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “সবাইকেই নিয়ম মানতে হবে।” |