নিজস্ব সংবাদদাতা • রিষড়া |
বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ডাকা দু’দিনের (২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি) সাধারণ ধর্মঘটে কাজে যোগ না-দেওয়ায় রাজ্যের কিছু জায়গায় কয়েক জনের উপরে শাসক দলের হামলার অভিযোগ উঠেছিল। একই কারণে এ বার রিষড়া পুরসভার চার দলীয় কাউন্সিলরকে শো-কজ করল তৃণমূল।
সাত দিনের মধ্যে ধর্মঘটের দু’দিন কাজে না আসার কারণ জানতে চেয়ে বুধবার পুরসভার তৃণমূলের দলনেতা সুভাষ দে এ সংক্রান্ত চিঠি দেন হর্ষপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, অশোক দেউটিয়া, মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায় ও জাহিদ হাসান খান নামে ওই চার কাউন্সিলরকে। সুভাষবাবু বলেন, “আমরা বন্ধ-ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। আমাদের দলনেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় একাধিকবার ধর্মঘটের দিন কাজে আসার জন্য সকলকে বলেছিলেন। তা সত্ত্বেও ওই চার জন কেন ধর্মঘটের দু’দিন এলেন না, সে ব্যাপারে তাঁদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। তাঁদের উত্তর দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে।” দলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “শো-কজের বিষয়টি শুনেছি। ওই কাউন্সিলররা ধর্মঘটের দু’দিন কেন আসেননি তা দলীয় ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” এ ব্যাপারে পুরপ্রধান তৃণমূলেরই শঙ্কর সাউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
হর্ষপ্রসাদবাবু পুরসভার জল ও আলো বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল-ও বটে। দলের ওই চিঠির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এ দিন তিনি বলেন, “এমন কোনও চিঠি এখনও পাইনি। ধর্মঘটের দু’দিনই সল্টলেকে মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলাম।” কাউন্সিলর অশোক দেউটিয়া বলেন, “আমি অসুস্থ। বাইরে কম বেরোচ্ছি। বিষয়টি পুরসভায় ফোন করে জানিয়েছি।” অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন মৌসুমিদেবীও। তিনি বলেন, “সুস্থ থাকলেও যে যেতাম তা বলতে পারছি না। পুরসভায় তো কাজই হয় না।” অপর কাউন্সিলর জাহিদ হাসান খান অবশ্য একটি মামলায় বেশ কিছু দিন এলাকাছাড়া।
শো-কজের পিছনে অবশ্য অন্য সমীকরণও দেখছে তৃণমূলেরই একাংশ। রিষড়া পুরসভার নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল পেয়েছিল যথাক্রমে ন’টি এবং আটটি আসন। বামফ্রন্ট পায় ছ’টি। নির্বাচনে আলাদা লড়লেও পরবর্তী সময়ে জোট করে পুরসভা দখল করে তৃণমূল ও কংগ্রেস। পরে কংগ্রেসের আট জন কাউন্সিলরই তৃণমূলে যোগ দেন। দল বদল করলেও চেয়ারম্যান থেকে যান শঙ্কর সাউ। এই বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তৃণমূলের অনেক কাউন্সিলর। তাঁরা এ নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে তদ্বিরও করেন। কিন্তু চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন না হওয়ায় তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন। ধর্মঘটে অনুপস্থিত থাকা কাউন্সিলররা সেই শিবিরেরই লোক বলে জানিয়েছেন হুগলি জেলা তৃণমূলের একটি অংশ। |