|
|
|
|
কপ্টার দুর্নীতি: নয়া সমীকরণের গন্ধ |
কংগ্রেসের পাশে বাম, বিজেপির সঙ্গী তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ভোটের মুখে কপ্টার দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ ভোঁতা করে দিতে মোক্ষম চাল দিল সরকার। মায়া-মুলায়ম ও শরিকদের সমর্থন নিয়ে আগ বাড়িয়ে গঠন করে দিল যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)। কিন্তু জেপিসি গঠনের বিরোধিতা করে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি যখন কক্ষত্যাগ করল, সিপিএম তখন জেপিসি সমর্থন করে কমিটিতে নিজের এক জন সদস্যকে সামিল রাখল।
যদিও রাজ্যসভায় তৃণমূল ও বিজেপির ওয়াক আউটের পর রাজ্যসভায় উপস্থিত সিপিএমের প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ও সিপিআইয়ের ডি রাজাও জেপিসি নিয়ে ভোটাভুটির আগে কক্ষত্যাগ করেন। কিন্তু তাঁর আগেই প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় সংসদীয় মন্ত্রী কমল নাথ ও রাজীব শুক্লকে তাঁদের দলের পক্ষ থেকে কেরলের সাংসদ টি কে রঙ্গরাজনের নাম সদস্য হিসাবে অন্তভুর্ক্ত করার প্রস্তাব জানিয়ে দেন। বিজেপি যেমন এখনও জেপিসিতে দলের কারও নাম দেয়নি, সভাকক্ষ ত্যাগ করার পরেও বামেরা সদস্যের নাম প্রত্যাহার করেনি।
ফলে রাজধানীর অলিন্দে এখন নতুন সমীকরণের গন্ধ মিলছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি যতই নিজেকে ‘মিস্টার ক্লিন’ হিসাবে দেখাতে চান না কেন, কপ্টার দুর্নীতিতে ঘুষ কে খেয়েছে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। ভোটের আগে বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস যথেষ্ট অস্বস্তিতে। এই অবস্থায় বিজেপি গোড়া থেকে জেপিসি গঠনে আপত্তি তুললেও কংগ্রেস আগ বাড়িয়ে এটি করতে চাইল একটাই কারণে, তদন্ত প্রক্রিয়া এর ফলে দীর্ঘায়িত করা যাবে। এক বছরের মাথায় লোকসভা নির্বাচন এসে গেলে এই কমিটির কোনও প্রাসঙ্গিকতাই থাকবে না। টু-জি কেলেঙ্কারি নিয়ে সেই কবে জেপিসি গঠন হয়েছে, কিন্তু এখনও বিরোধীরা সে ভাবে সেটিকে রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগাতে পারেনি।
আজ যখন কপ্টার কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনা স্থির ছিল, আর সরকার গায়ের জোরে মায়াবতী-মুলায়মের সাহায্যে কমিটি গড়া নিয়ে তৎপরটা চালাচ্ছিল, সীতারাম ইয়েচুরির মতো সিপিএমের শীর্ষ নেতারা ছিলেন না। তৃণমূলের প্রহায় সব সাংসদ, বিজেপির অরুণ জেটলি, রবিশঙ্কর প্রসাদ থেকে প্রায় সব শীর্ষ সাংসদই যখন হাজির ছিলেন, সেই সময় বাম শিবিরের উপস্থিতি ছিল মাত্র দু’জনের, প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ও ডি রাজা। ‘ইউপিএ-৩’-এর এক নতুন সমীকরণই অনেকে দেখতে পাচ্ছেন এর মধ্যে। তাঁরা দেখছেন বিজেপি-তৃণমূলের সমন্বয় আরও বাড়ছে। অন্য দিকে সিপিএম কংগ্রেসের হাত শক্ত করছে। যেখানে কংগ্রেসের লাভ, তাতে ফের শরিক হচ্ছে বামেরা।
যদিও বাম নেতাদের বক্তব্য, জেপিসি একটি সংসদীয় প্রক্রিয়া, তাই তাতে সামিল হওয়ায় অসুবিধা নেই। তা হলে তাঁরা কেন প্রথমে ওয়াক আউট করলেন না? প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়, ডি রাজাদের বক্তব্য, “আমরা গোড়াতেই সরকারকে জানিয়ে দিয়েছিলাম, জেপিসি গঠন নিয়ে ঐকমত্য হলে আমরা তার পক্ষে রয়েছি। কিন্তু যখন দেখলাম অন্য অনেক দল ওয়াক আউট করল, তখন বোঝা গেল এটি ঐকমত্যের সিদ্ধান্ত নয়। তাই আমরাও সভাকক্ষ ত্যাগ করেছি।” কিন্তু বাস্তব হল, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি বলে আসছে, তারা জেপিসি গঠনের দাবি জানাচ্ছে না। সরকার গঠন করতে চাইলেও তারা সমর্থন করবে না।
তৃণমূলের ডেরেক ওব্রায়েন বলেন, “আগের জেপিসিগুলির কী পরিণতি হয়েছিল, তা আমরা দেখতেই পাচ্ছি। জেপিসি কোনও সমাধান নয়। কপ্টার দুর্নীতির এক বছর কেটে গিয়েছে, এখনও কোনও এফআইআর দায়ের হয়নি। সিপিএম দ্বিচারিতা করছে।” |
|
|
|
|
|